তখন দুর্গাপুজো কার্নিভাল চলছিল। আর সেখান থেকে চিকিৎসক তপোব্রত রায়কে পুলিশ আটক করেছিল। কারণ তাঁর জামায় লেখা ছিল, ‘শিরদাঁড়া বিক্রি নেই।’ আর সেই জামায় লাগানো ব্যাজে জ্বলজ্বল করছিল স্লোগান, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস।’ সুতরাং একটা গোলমাল ঘটার সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছিল পুলিশ। তাই তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনা চাউর হতেই রে রে করে ওঠেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সময়সীমা বেঁধে দেন তাঁরা। তারপরই রাতে কলকাতা পুরসভার চিকিৎসক তপোব্রত রায়কে ছেড়ে দেওয়া হয়। যদিও এই ঘটনা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল কলকাতা এবং তাঁর কর্মস্থলে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ‘প্রতীকী অনশন’ শুরু করে দেন কলকাতা পুরসভার সমস্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির চিকিৎসকরা। যদিও এই ঘটনা নিয়ে কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে আজ, শুক্রবার কেউ কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। কাজের সময় ‘প্রতীকী অনশন’ করলেন কলকাতা পুরসভার সব চিকিৎসকরা। আগামীকাল শনিবার পুরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চিকিৎসকরা একটি বৈঠক করতে পারেন বলে সূত্রের খবর। সেখানে বিষয়টি তোলা হবে বলেও জানা যাচ্ছে। থানা থেকে বেরিয়ে এসে কর্মস্থলে যোগ দেন তপোব্রত রায়। তাঁকে সকলে সাদর অভ্যর্থনা জানান। এই ঘটনা থেকে বার্তা যায়, জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে থাকবেন তিনি। মাথানত করবেন না।
বিজয়া দশমীর পর রেড রোডে দুর্গাপুজোর কার্নিভাল চলছিল। কলকাতা পুরসভার টিমে ইমার্জেন্সি ডিউটিতে ছিলেন চিকিৎসক তপোব্রত রায়। তিনি অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের সমর্থনে ‘প্রতীকী অনশনকারী’ লেখা ব্যাজ পরে হাজির হন। তাই তাঁকে আটক করা হয়। ময়দান থানার পুলিশ তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে গেলে হইচই পড়ে যায়। জুনিয়র ডাক্তাররা ময়দান থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তারপর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পরই কলকাতা পুরসভার চিকিৎসকদের একাংশ দাবি করেন, তাঁদের সহকর্মীকে ‘হেনস্থা’ করা হয়েছে। আর তাই ক্ষমা চাইতে হবে কলকাতা পুলিশকে। পুরসভাকে ঘটনার নিন্দা জানাতে হবে।
কিন্তু এগুলি বাস্তবে কোনওটিই ঘটেনি। তাই প্রতিবাদে ‘প্রতীকী অনশন’ শুরু হয়। আর কলকাতা পুরসভার চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি তোলা হয়। এক, চিকিৎসক তপোব্রত রায়কে পুলিশের আটক করার ঘটনায় কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে তাঁদের নির্দিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দা করতে হবে। দুই, পুলিশকে তপোব্রত রায়ের কাছে দুঃখপ্রকাশ করতে হবে। তিন, কলকাতা পুরসভার চিকিৎসককে অপমান করা হয়েছে। তাই কলকাতা পুরসভাকেই আইনি সহায়তা দিতে হবে। এই তিন দাবি এখনও মানা হয়নি। মুখে কুলুপ এঁটেছেন পুরকর্তারা।