সংবাদদাতা, রামপুরহাট: তারাপীঠ বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে গর্ভবতী দ্বিতীয় স্ত্রীকে খুন করে পেট্রল ঢেলে জ্বালিয়ে চম্পট দিয়েছিল স্বামী। ঘটনার পাঁচদিনের মাথায় ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুর থেকে অভিযুক্ত স্বামী রাহুল মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে মল্লারপুর থানার পুলিস। বৃহস্পতিবার রাতে খুনে ব্যবহৃত ‘থর’ গাড়ি উদ্ধার করল পুলিস। জামশেদপুরের একটি গ্যারেজ থেকে গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করা হয়। গাড়িটি অভিযুক্তের বাবা ডালিম মণ্ডলের নামে নথিভুক্ত।
গত ৯ অক্টোবর মল্লারপুরের ষাটবেড়িয়া গ্রামের কাছে সাঁইথিয়া যাওয়ার রাস্তার ধারের জমি থেকে বছর ঊনত্রিশের গর্ভবতী প্রীতি পাণ্ডের পোড়া দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে গত রবিবার রাতে ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুর থেকে বছর বত্রিশের বিত্তশালী স্বামী রাহুল মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। ধৃতের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের আদিত্যপুর থানার গামারিয়া গ্রামে। প্রীতির বাড়ি ওল্ড মালদার মাধাইপুরে। দিল্লির একটি পার্লারে তিনি কাজ করতেন। সেখানেই রাহুলের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। একবছর আগে প্রীতিকে বিয়ে করে রাহুল। কিন্তু রাহুল বিবাহিত। তার একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে। প্রীতিকে বিয়ের বিষয়টি সে বাড়িতে জানায়নি। গামারিয়া গ্রামেই বাড়ি ভাড়া নিয়ে রেখেছিল প্রীতিকে। এরই মধ্যে প্রীতি গর্ভবতী হয়ে পড়েন। রাহুল সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দেয়। রাজী না হওয়ায় প্রীতির উপর শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। প্রীতি দিদির বাড়ি চলে আসে। গত ৯ অক্টোবর বন্ধু তাপস প্রধানকে নিয়ে একটি থর গাড়ি নিয়ে ওল্ড মালদায় যায় রাহুল। সেখানে ছ’মাসের অন্তঃসত্ত্বা প্রীতিকে পুজোর শাড়ি ও কসমেটিক কিনে দেওয়ার নাম করে গাড়িতে চাপায়। পরে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে তারাপীঠে এসে গাড়ির মধ্যেই শ্বাসরোধ করে প্রীতিকে খুন করে রাহুল। পরে সাঁইথিয়া রোডের নির্জন ষাটবেরিয়া গ্রামের কাছে রাস্তার ধারে জমিতে দেহটি ফেলে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে চম্পট দেয়। পুলিস জানিয়েছে, খুনে ব্যবহৃত গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। ওইদিন গাড়িতে থাকা ধৃতের বন্ধুর খোঁজ চলছে।