অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা তৈরিতে গড়িমসি, ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবে রাজ্য সরকার
বর্তমান | ১৯ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শিয়ালদহ ইএসআই হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের জের! রাজ্যের ১৩টি ইএসআই হাসপাতালে পাওয়ার অডিট করানোর সিদ্ধান্ত শ্রম দপ্তরের। অর্থাৎ, এই হাসপাতালগুলির বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে পাখা, লাইট, এসি মেশিন সহ সমস্ত ইলেকট্রিক ওয়্যারিং ঠিক কী পরিস্থিতিতে আছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। এমনকী কোথাও বিদ্যুতের ভোল্টেজ ওঠা নামার মতো মারাত্মক সমস্যা আছে কি না, তাও চিহ্নিত করা হবে। দ্রুত এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট তৈরি করা হবে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিটি হাসপতালেই ইলেকট্রিক ওয়্যারিং মেরামতির কাজ করা হবে। সূত্রের খবর, শুক্রবার ইএসআই হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর নব মহাকরণে দপ্তরের অফিসে উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। তিনি বলেন, এই বৈঠকেই পাওয়ার অডিট করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব এই সংক্রান্ত রিপোর্টও তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে নারকেলডাঙা থানায় ইএসআই কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বর্তমানে রাজ্যে ১৩টি ইএসআই হাসপাতাল রয়েছে। আরও দুটি তৈরি হচ্ছে হলদিয়া ও মধ্যমগ্রামে। এই ১৩টি হাসপতালে আন্ডারগ্রাউন্ড জলের রিজার্ভার তৈরি করে অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের এমপ্লয়িজ স্টেট ইনস্যুরেন্স কর্পোরেশনের ( ইএসআইসি) বলেই দাবি রাজ্যের। তবে বর্তমানে শুধু মাত্র ছ’টি হাসপতালেই এই কাজ শুরু করা হয়েছে। ২০২০ সাল থেকে ইএসআই’এর আঞ্চলিক কমিটির ১০৭ থেকে ১১৯ তম প্রতিটি বৈঠকেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা তৈরি কাজে ঢিলেমির বিষয়টি তুলে ধরে রেজল্যুশনে উল্লেখ করা হয়। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সংস্থার তত্ত্বাবধানে থাকা এই কাজে গতি আসেনি বলেই দাবি রাজ্য প্রশাসনের। শিয়ালদহ ইএসআইও এর ব্যতিক্রম নয় বলেও দাবি করেছেন রাজ্য প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা। হাসপাতালের সুপার অদিতি দাস বলেন, শিয়ালদহ ইএসআই হাসপতালেও এই কাজ দেড় বছর আগে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। আজ সময় মতো কাজ শেষ হলে, একজনের প্রাণ যেত না। ফলে যে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এই কাজ করছে, তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে রাজ্যের তরফে। প্রশ্ন উঠছে, আঞ্চলিক কমিটির প্রতিটি বৈঠকে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা তৈরির কাজে গড়িমসির বিষয়টি উল্লেখ করা হলেও, কাজ শেষ করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ কেন নেওয়া হয়নি কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে? এর উত্তর চেয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে চিঠি লেখা হবে বলেও খবর।