• কুলগাছিয়ায় জাতীয় সড়কে গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হোমগার্ড ও পথচারীর
    বর্তমান | ১৯ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, উলুবেড়িয়া: শুক্রবার সকালে উলুবেড়িয়ার কুলগাছিয়ার শ্রীরামপুরে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ট্রাফিক পুলিসের এক হোমগার্ড ও এক পথচারীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কে। দ্রুতগতিতে আসা একটি প্রাইভেট গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁদের ধাক্কা মারে। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে উলুবেড়িয়ার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা হোমগার্ড সোমনাথ রায়কে (৪১) মৃত বলে ঘোষণা করেন। পথচারী বিশ্বনাথ জানার (৪৪) মৃত্যু হয় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কিছুক্ষণ পর। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত হোমগার্ডের বাড়ি সাঁকরাইল থানার বাণীপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝোড়হাট এলাকায় এবং ওই পথচারীর বাড়ি বাগনান থানার চককমলা ধোড়ামান্না পশ্চিমপাড়ায়।


    জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল পৌঁনে ৬টা নাগাদ শ্রীরামপুরে ট্রাফিকের ডিউটিতে যোগ দেন সোমনাথ। তিনি ডিউটিতে যোগ দেওয়ার পর সেই ছবি তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠান। দুর্ঘটনাটি হয় সকাল ৬টা ১০ মিনিটে। দ্রুতগতিতে আসা একটি প্রাইভেট গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সরাসরি ধাক্কা মারে ওই হোমগার্ডকে। তিনি রাস্তার পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছিটকে পড়েন। গাড়িটি এরপর ধাক্কা মারে পথচারী বিশ্বনাথ জানাকে। তিনিও রক্তাক্ত হন দুর্ঘটনায়। স্থানীয় বাসিন্দারাই দু’জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে উলুবেড়িয়া শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকরা সোমনাথবাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। গুরুতর অবস্থায় ভর্তি করা হয় বিশ্বনাথবাবুকে। কিন্তু খানিক বাদেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। দু’জনের মৃতদেহই ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে, সোমনাথের মৃত্যুর খবর তাঁর বাড়িতে এসে পৌঁছতেই কান্নার রোল ওঠে। শোকের ছায়া নামে ঝোড়হাট এলাকায়। বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও ন’বছরের মেয়েকে নিয়ে সংসার ছিল সোমনাথ রায়ের। মৃতের স্ত্রী মৌমিতা রায় কান্নাভেজা গলায় বলেন, শুক্রবার ভোর ৫টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে ডিউটিতে গিয়েছিলেন সোমনাথ। সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ দুঃসংবাদটি আসে। ওই পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমনাথের বাবা মদন দাসও পুলিসে কাজ করতেন। কর্মরত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হওয়ায় সেই চাকরি পান সোমনাথ। বছর দশেক আগে তিনি চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। একমাত্র উপার্জনশীল সদস্যকে হারিয়ে কার্যত দিশাহারা রায় পরিবার। ময়নাতদন্তের পর এদিন বিকেলে মৃত হোমগার্ডের দেহ উলুবেড়িয়া ট্রাফিক গার্ডের অফিসে নিয়ে আসা হলে পুলিস আধিকারিক ও কর্মীরা তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান।


    বিশ্বনাথ জানা কুলগাছিয়ার একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। তিনি সেই সময় ওই পথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। গাড়িটি সোমনাথবাবুকে ধাক্কা মারার পর তাঁকেও পিষে দেয়। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিসের এক কর্তা বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ঘাতক গাড়িটিকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। গাড়ি ও চালকের খোঁজে তল্লাশি চলছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)