কে প্রথম বার্তা পাঠাবে, তার উপরই নির্ভর করছে বাংলায় আসন্ন উপ-নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট আদৌ হবে কি না। বামেরা আশা করছে, জোট-বার্তা নিয়ে কংগ্রেস তাদের দরজায় কড়া নাড়বে। একই আশায় বসে আছে প্রদেশ কংগ্রেসও। কিন্তু শুক্রবার পর্যন্ত কেউ কারও দরজায় কড়া না নাড়ায় বাম-কংগ্রেস জোটের বিষয়টি আপাতত ঝুলেই রয়েছে। তবে প্রদেশ কংগ্রেসের নয়া নেতৃত্বের হাবভাব দেখে বামেদের ধারণা, এই উপ-নির্বাচনে জোটের বিষয়ে তেমন উৎসাহ নেই বিধান ভবনের।সিপিএম এবং কংগ্রেস পরস্পরের বার্তার অপেক্ষায় বসে আছে। এ দিকে, তৃণমূল ও বিজেপি ছয় কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে প্রার্থী তালিকা প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই তারা প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দেবে বলে সূত্রের দাবি। কিন্তু বাম-কংগ্রেস কী করবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। শুক্রবার প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব এ বিষয়ে আলোচনা করতে বৈঠকে বসেন। একই দিনে বৈঠক হয় বামফ্রন্টেরও।
প্রদেশ কংগ্রেসের নয়া সভাপতি শুভঙ্কর সরকার উপর থেকে জোট-নীতি চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী নন। সিপিএমের সঙ্গে জোটের বিষয়ে তিনি দলের সংশ্লিষ্ট জেলার সভাপতিদের কাছে এ দিনের বৈঠকে মতামত চান। সূত্রের খবর, অধিকাংশ জেলা নেতৃত্বই ‘একলা চলো’ নীতির পক্ষে সওয়াল করেন। তবে রাজ্যস্তরের কিছু কংগ্রেস নেতা বৈঠকে জানান, বাংলায় একলা লড়ার মতো সাংগঠনিক অবস্থা এই মুহূর্তে কংগ্রেসের নেই। তাই বামেদের সঙ্গে জোট করাই যুক্তিযুক্ত।
সূত্রের খবর, শুভঙ্কর নিজে এই বৈঠকে বলেন, ‘উপ-নির্বাচনে জোট না-ও হতে পারে। এর নজির সাম্প্রতিক অতীতেই আছে। আসলে সবটাই নির্ভর করছে রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর। তা ছাড়া, বামেদের তরফে কোনও বার্তা এখনও আসেনি। ফলে সিপিএম আমাদের সঙ্গে জোট করে উপ-নির্বাচন লড়তে চায় কি না, সেটাও তো স্পষ্ট নয়।’
অন্য দিকে, বামফ্রন্টের বৈঠকেও এ দিন সব শরিক দলকে জানানো হয় যে, এখনও কংগ্রেসের দিক থেকে কোনও জোট-বার্তা আসেনি। অন্যান্য বার জোট বার্তা নিয়ে কংগ্রেসই সিপিএমের দরজায় কড়া নাড়ে। এ বার তেমন কিছু না হওয়ায় বামেদের অনেকেই মনে করছেন, জোটে উৎসাহ নেই প্রদেশ কংগ্রেসের নয়া সভাপতির।
সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে বিমান বসুরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আগামী ২০ অক্টোবর ফের বামফ্রন্টের বৈঠক বসবে। এর মধ্যে কংগ্রেস আলিমুদ্দিনের দরজায় কড়া নাড়লে ভালো, না হলে বামফ্রন্ট নিজেদের মতো করে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে ফেলবে। বৃহত্তর বাম ঐক্যের বার্তা দিতে নৈহাটি আসনটি বামফ্রন্টের বাইরে থাকা কোনও বাম দলকে ছাড়া যায় কি না, তা নিয়েও এ দিনের বৈঠকে চর্চা হয়েছে। গত বিধানসভা ভোটে হাড়োয়া আসনটি আইএসএফকে ছেড়েছিল সিপিএম। এ বার সেখানে নাগরিক সমাজের কাউকে নির্দল হিসেবে প্রার্থী করার পরিকল্পনা রয়েছে বামফ্রন্টের।