• নার্কো-পলিগ্রাফে রাজি নন সন্দীপ, অভিজিৎও
    এই সময় | ১৯ অক্টোবর ২০২৪
  • এই সময়: আগে পাওয়া গিয়েছিল কিছু অডিয়ো ফুটেজ, আর এ বার আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায় সিবিআইয়ের হাতে এলো বেশ কিছু ভিডিয়ো ক্লিপিংস। যার ভিত্তিতে আদালতের কাছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ, ওই হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল খুন-ধর্ষণের ঘটনা যৌথ ভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।এরই পাশাপাশি সিএফএসএল-এ পরীক্ষা করা কয়েকটি ফোন কলের ডেটাও সংগ্রহ করেছে সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এর থেকেও স্পষ্ট, ধৃত দুজন প্রমাণ লোপাটের ষড়যন্ত্রে যুক্ত।

    শুক্রবার শিয়ালদহ আদালতে বিচারক অরিজিৎ মণ্ডলের এজলাসে সিবিআই জানায়, ইতিমধ্যে চারটি হার্ড ডিস্ক উদ্ধার হয়েছে। তাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ থাকতে পারে। সেগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হোক।

    আরজি করের ঘটনায় পুজোর ঠিক আগে চার্জশিট পেশ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তাতে মূল অভিযুক্ত হিসেবে কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দেখানো হলেও সন্দীপ এবং অভিজিতের বিরুদ্ধে ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্র’-এর অভিযোগ আনা হয়। সে কারণে সন্দীপের নার্কো এবং অভিজিতের পলিগ্রাফ টেস্টের আবেদন করেন তদন্তকারীরা। এদিন আদালতে সশরীরে দু’জনকেই হাজির করা হয়। যদিও বিচারকের সামনে তাঁরা অসম্মতি দেওয়ায় সিবিআইয়ের আবেদন খারিজ হয়ে যায়।

    এদিকে, শুক্রবার আদালতে-সওয়াল জবাব চলার সময়েই সিজিও কমপ্লেক্সে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক অপূর্ব বিশ্বাসকে। তাঁর বয়ানও রেকর্ড করা হয়।

    এদিন শিয়ালদহ আদালতে সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয়, দু’জনের মোবাইল ফোনের ডেটা সংগ্রহ করে সিএফএসএলে পাঠানো হয়েছিল। তাতে অনেকের সঙ্গে কথাবার্তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়া মিলেছে ভিডিয়ো ফুটেজ। এ থেকে স্পষ্ট সন্দীপ এবং অভিজিৎ মিলে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছিলেন। ওই ডিজিটাল তথ্য খতিয়ে দেখতে সাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন রয়েছে বলেও আদালতের কাছে আবেদন করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, ‘অভিযুক্তরা মূল ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এখনই তাঁদের জামিন দেওয়া হলে তদন্তে প্রভাব পড়তে পারে।’

    অভিজিৎ মণ্ডলের তরফে আইনজীবী ছিলেন মহম্মদ সাজিদ এবং আনোয়ার আলি। তাঁরা সওয়ালে বলেন, ‘সিএফএসএল রিপোর্ট পেয়ে গিয়েছে সিবিআই। আর কী রিপোর্ট তৈরি করবেন ওরা? আমার মক্কেল যাওয়ার আগে হাসপাতালের ঘটনাস্থলে আরও অনেকে পৌঁছে গিয়েছিলেন। সেখানে অনেক চিকিৎসকও হাজির ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে তথ্যপ্রমাণ লোপাট হলে আগে হয়ে থাকতে পারে। তাতে আমার মক্কেল যুক্ত নন।’ সন্দীপের আইনজীবী জোয়েব রউফ বলেন, ‘গ্রেপ্তারের কারণ এখনও জানানো হয়নি আমাদের। চার্জশিট হয়ে গেল, অথচ আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে কোনও স্ট্রং তথ্যপ্রমাণ পেশ করতে পারেনি সিবিআই। যে কোনও শর্তে জামিন দেওয়া হোক।’

    জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, ‘সঞ্জয় রায়ের কিছু বায়োলজিক্যাল এভিডেন্স আমরা পেয়েছি। ঘটনাস্থল থেকে যা যা তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, তার ভিত্তিতে প্রথম চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এখন দেখা হচ্ছে, ওই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি বা ষড়যন্ত্রে দু’জনের কোনও যোগ রয়েছে কি না।’

    এ দিন বিচারক দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পরে সন্দীপ এবং অভিজিৎ মণ্ডলের জামিনের আবেদন খারিজ করে তাঁদের ৪ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
  • Link to this news (এই সময়)