পূর্ণিমা কান্দুর শরীরে কী ভাবে গেল ক্ষতিকারক পদার্থ? উঠছে নানা তত্ত্ব
এই সময় | ১৯ অক্টোবর ২০২৪
সঞ্চিতা মুখোপাধ্যায়, পুরুলিয়া
প্রয়াত পূর্ণিমা কান্দুর ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে এই করোসিভ সাবস্ট্যান্স অর্থাৎ ক্ষতিকারক পদার্থের উপস্থিতির উল্লেখ রয়েছে, যা থেকে সামনে আসতে শুরু করেছে একাধিক নতুন তত্ত্ব। এই মুহূর্তে সেই ক্ষতিকারক পদার্থ ঠিক কী তা জানতেই উদগ্রীব পরিবারের সদস্যরা। পরের প্রশ্ন উঠেছে, কী ভাবে এই পদার্থ তাঁর পেটে গেল? তাঁকে কি কেউ কিছু খাইয়েছিল নাকি তিনি নিজেই কিছু খেয়েছিলেন? আবার কোনও কোনও মহল থেকে উঠে আসছে আত্মহত্যার তত্ত্বও।জেলার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সব দিকই তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। তাঁর শরীরে ক্ষতিকারক পদার্থ বলতে কী ছিল তা রিপোর্ট পেলেই বোঝা যাবে। সেটা জানার জন্য ভিসেরা পরীক্ষা করা হচ্ছে।’ তবে এখনও পর্যন্ত পূর্ণিমার মৃত্যুতে খুনের কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
পরিবারের অন্যতম সদস্য মিঠুন কান্দু অবশ্য ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টের পরেও কাকিমা পূর্ণিমাকে খুন করা হয়েছে বলে ইঙ্গিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ময়না তদন্তের পূর্ণ রিপোর্ট পাওয়ার পরে যদি দেখা যায় মৃত্যু বিষক্রিয়ায় হয়েছে, তবে আমি নিজেই খুনের অভিযোগ দায়ের করব।’ গত ১১ তারিখ নিজের বাড়িতেই সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার হয় পূর্ণিমার দেহ। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিত্সকরা।
২০২২-এর মার্চ মাসে পূর্ণিমার স্বামী তথা ঝালদা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তপন কান্দু দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন। তার পর থেকেই খবরে বার বার আসে পূর্ণিমার নাম। ত্রিশঙ্কু ঝালদা পুরসভায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিতও হন তিনি। একাধিকবার রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে সরাসরি মুখ খোলেন। স্বামীর হত্যার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত দাবি করে পূর্ণিমা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই তদন্ত শুরু হলেও এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। এরই মধ্যে পূর্ণিমার রহস্যমৃত্যু নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে ফের উত্তাল ঝালদার রাজনীতি।
ঘটনার দিনে কিছুক্ষণ বাড়িতে একা ছিলেন পূর্ণিমা। তাঁর ছেলে দেব কান্দুর বক্তব্য, সেই সময় মাত্র ৪৫ মিনিট। এত অল্প সময়ে কেউ কি তাঁকে কিছু খাইয়ে দিতে পারবে, নাকি তিনি নিজেই কিছু খেয়েছিলেন? উঠেছে এই প্রশ্ন। তাঁর নিকটাত্মীয়দের থেকে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাসে প্রচণ্ড মানসিক চাপে ছিলেন তিনি। নিজেকে অনেকটা গুটিয়েও নেন। পূর্ণিমার ছেলে দেব জানিয়েছেন, ঘুমের ওষুধ খাওয়া অভ্যাস ছিল তাঁর মায়ের। তবে ঘরের ভিতরে কোনও ওষুধ বা শিশি পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন দেব। আত্মহত্যার তত্ত্বও মানতে চাননি তিনি।