আয়োজকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, গীতা জয়ন্তী উপলক্ষে প্রথম বার মায়াপুরে বসে এই কর্মসূচি। তার পরে গত বছর ২৪ ডিসেম্বর কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে তা আয়োজন করা হয়। অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম রাখা হলেও তিনি শেষ পর্যন্ত আসেননি। কলকাতায় ওই কর্মসূচিতে উত্তরবঙ্গ থেকে যোগদান তেমন ছিল না। আয়োজকদের দাবি, উত্তরবঙ্গ থেকে তাঁদের কাছে আবেদন করা হয়, একই রকম কর্মসূচি সেখানেও নেওয়া হোক। এই বছর আগামী ১২ ডিসেম্বর গীতা জয়ন্তী। তা উপলক্ষে ১৫ ডিসেম্বর শিলিগুড়িতে ওই কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যেই প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে বলে খবর। আয়োজকেরা জানান, থাকছেন ভিন্-রাজ্যের অতিথিরা। আমন্ত্রণের জন্য সময় চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে মমতাকেও আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। অতিথি তালিকায় থাকতে পারেন রামদেবও। তবে সেই সময়ে কুম্ভমেলা চলায় শঙ্করাচার্যদের আসার সম্ভাবনা কম। সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবতও সম্ভবত আসছেন না বলে জানা গিয়েছে। গীতা পাঠের আসরে পাঁচটি অধ্যায় পাঠ হতে পারে। যাঁরা তা পাঠ করবেন, তাঁদের জন্য পোশাকও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। কাজী নজরুল ইসলামের গান দিয়ে কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা। আয়োজকদের তরফে স্বামী নির্গুণানন্দ বলেন, “গীতা পাঠ সনাতনিদের বার্ষিক উৎসব। শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গের মানুষ সনাতনি উৎসবে মাতবেন।”
যদিও কর্মসূচি নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল ও সিপিএম। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “গীতা আমরা সবাই পড়ি। গীতা একটা জীবন দর্শন। গীতা পাঠ হলে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু গীতা দেখিয়ে যদি কেউ ভোট পেতে চান, তা হলে মনে রাখতে হবে গীতা যেখানে তৈরি হয়েছিল সেই কুরুক্ষেত্রে তৃণমূল পাণ্ডব, আর বিজেপি কৌরব!” কর্মসূচির সমালোচনা করে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, “গীতা পাঠের জন্য ব্রিগেড কেন লাগবে? এটা তো যাঁর যাঁর বিশ্বাসের বিষয়। তাঁরা পড়েন। বিজেপি, আরএসএস-এর জন্মের আগে থেকে থেকে পড়েন। প্রথমে ব্রিগেডে গীতা পড়া হল। জমল না। প্রধানমন্ত্রী আসবেন করে এলেন না। এখন শিলিগুড়িতে। আসল উদ্দেশ্য গীতা পাঠের নাম করে রাজনীতি করা। আমার ধারণা প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি কেউই আসবেন না।”