• ধর্মতলার অনশন মঞ্চে মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিব, ফোনে জুনিয়রদের বার্তা মমতার
    প্রতিদিন | ১৯ অক্টোবর ২০২৪
  • ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় কেন ধরনা মঞ্চে আসছেন না, সে প্রশ্ন তুলেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। শুক্রবার রাতে ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শনিবার ধরনা মঞ্চে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ও স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। সঙ্গে ছিলেন ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। অনশনকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে ফোনে কথা মুখ্যমন্ত্রীর। কোথায়, কতটা কাজ হয়েছে তা আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অনশন প্রত্যাহারের আর্জি জানালেন তিনি। 

    মুখ্যমন্ত্রী এদিন ফোনে বলেন, “আপনাদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে চিন্তিত। আমি আপনাদের শুভকামনা করছি। সাধ্যমতো যতটা পারব, সহযোগিতা করব। আন্দোলন করা আপনাদের অধিকার। বেশিরভাগ দাবিপূরণ করেছি। পুলিশ কমিশনারকে সরিয়ে দিয়েছি। একটি দপ্তর থেকে সবাইকে একসঙ্গে সরিয়ে দিলে দপ্তরটা চলতে পারে না। সরকারেরও কিছু ব্যাপার আছে। আমি বলব, তাড়াতাড়ি আন্দোলন থেকে বেরিয়ে আসুন। এটা আমার অনুরোধ। মানবেন কী মানবেন না, সেটা আপনাদের ব্যাপার। আমি চাই পরেরবার থেকে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে একসঙ্গে নির্বাচন হোক। কালীপুজো, দীপাবলি, উপনির্বাচন আছে। আমি কথা দিচ্ছি, ৩-৪ মাস সময় দিন। আপনাদের সমস্যাগুলো নিশ্চয়ই দেখে নেব। আপনাদেরও পরীক্ষা আছে। পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। আন্দোলন থেকে সরে আসুন। আদালতে মামলা চলছে। সুবিচার মিলবে। আমি মানবিকতার পক্ষে। সাধ্যমতো যতটা পারব সহযোগিতা করব।” অনশন প্রত্যাহারের আর্জিও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, “অনশন প্রত্যাহার করে আমার সঙ্গে বসতে পারো।”

    মুখ্যমন্ত্রীর কথা শেষ হওয়ার পরই ধরনা মঞ্চে ওঠে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান। জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদারের সঙ্গেও ফোনে কথা হয় মুখ্যমন্ত্রীর। দেবাশিস বলেন, “আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে, আমরা শুধু ভোটের জন্য অনশন করছি।” এর পর মুখ্যমন্ত্রী জুনিয়র চিকিৎসকদের নবান্নে সময় দেন। সোমবার বিকেল পাঁচটায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী।  

    উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট, নাইট শিফট ছিল তরুণী চিকিৎসকের। পরদিন সেমিনার হল থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তরুণী চিকিৎসককে। এই ঘটনার পর থেকে সুবিচার, নিরাপত্তা-সহ একাধিক দাবিতে আন্দোলনে শামিল জুনিয়র চিকিৎসকরা। বর্তমানে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন ৮ জন জুনিয়র চিকিৎসক। আন্দোলনের পরবর্তী রূপরেখা স্থির করতে শুক্রবার সিনিয়রদের সঙ্গে বৈঠক করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। বৈঠকের পর জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদার জানান, শনিবার সোদপুর থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করা হবে। রবিবার ধর্মতলার মঞ্চে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। ওই মহাসমাবেশে জুনিয়র ও সিনিয়র চিকিৎসকদের পাশাপাশি নাগরিক সমাজের প্রত্যেককে যোগদানের আহ্বান জানানো হয়েছে।

    সোমবার রাজ্যের প্রত্যেকটি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হবেন চিকিৎসকরা। সোমবার পর্যন্ত রাজ্য সরকারকে ডেডলাইন বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে আলোচনায় বসতে হবে। মেনে নিতে হবে দশ দফা দাবি। অন্যথায় মঙ্গলবার সর্বাঙ্গীণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। তাতে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের প্রত্যেক জুনিয়র ও সিনিয়র চিকিৎসকরা শামিল হবেন। ডেডলাইন বেঁধে দেওয়ার পরই ধরনা মঞ্চে মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিব। জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রীও।
  • Link to this news (প্রতিদিন)