কৃষ্ণনগরের ঠিক বিপরীত ঘটনা ঘটেছে হুগলি জেলার ভদ্রেশ্বরে। বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে প্রেমিককে পৃথিবী থেকে সরিয়ে ফেললেন এক মহিলা বলে অভিযোগ। রাস্তায় এই ঘটনা ঘটেছে। যা শুনে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে এলাকায়। হাড়হিম এই ঘটনার কথা শুনতে অবাক লাগলেও বাস্তবে এমনটাই ঘটেছে। একেবারে রাস্তায় ফেলে প্রেমিকের বুকের উপর একের পর এক এলোপাথারি ছুরির আঘাত করলেন প্রেমিকা বলে অভিযোগ। আর রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়লেন প্রেমিক। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ।
বেশ কিছুদিন ধরেই প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল প্রেমিকার। তা থেকে ঝগড়া, অশান্তি চলছিলই। মাঝে মিটে গেলেও রেশ থেকে গিয়েছিল বলে সূত্রের খবর। এবার সেটাই চরম পর্যায়ে পৌঁছল। রাস্তায় প্রেমিকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল প্রেমিকা। তবে সেটা যে ভয়ঙ্কর আকার নেবে ভাবতেও পারেননি প্রেমিক। বরং একের পর এক ছুরির আঘাতে তাঁকে প্রাণ দিতে হল প্রেমিকার হাতেই। রাস্তায় লুটিয়ে পড়লেন চরম আঘাত সহ্য করতে না পেরে। তারপর তাঁকে ওভাবেই রাস্তায় ফেলে রেখে দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেন দুই মহিলা। এই গোটা ঘটনা সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। হুগলির ভদ্রেশ্বরের খুঁড়িগাছি ঘটনায় সম্পর্কের টানাপোড়েনই দেখছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত প্রেমিকের নাম তাপস প্রামাণিক। ভদ্রেশ্বরেরই বাসিন্দা। আর প্রেমিকা শবনম খাতুন ছুরি দিয়ে আঘাত করে খুন করেছে। রিষড়ায় স্বামীর সঙ্গে শবনম থাকত। সম্প্রতি ভদ্রেশ্বরের খুঁড়িগাছিতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে আসেন। সেখানেই তাপস প্রামাণিকের সঙ্গে প্রথম আলাপ। তাপসেরও বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। তারপর শবনমের ভাড়া বাড়িতে যাতায়াতের সুবাদে দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। শবনম ও তাপস নানা জায়গায় ঘুরতেও যায়। কিন্তু তাল কেটে যায় মাঝে আরও একজন নারীর প্রবেশে। তখন থেকেই সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে তাপস, শবনম এবং আরও এক যুবতী রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। তখন তাঁদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। আর শবনম তাপসের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ছুরি দিয়ে একের পর এক আঘাত করে। তাতেই মৃত্যু হয় তাপসের।
খুনের ঘটনার খবর পেয়ে অ্যাঙ্গাস ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। কিন্তু ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে তাপস প্রামাণিকের। ওই দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত পাঠানো হয় চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসাপাতালে। আর অভিযুক্ত মহিলাকে থানায় নিয়ে এসে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। সঙ্গে থাকা প্রেমিকার বান্ধবীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ঘটনা নিয়ে চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি জানান, নিজেদের মধ্যে অশান্তির জেরেই খুন। চাঁপদানি পুরসভার চেয়ারম্যান সুরেশ সাউ বলেন, ‘তাপসের আগের স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। এখন ওই মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে ছিল। নিজেদের মধ্যে অশান্তি চলছিল। শনিবার এমন ঘটনা ঘটে। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।’