বহু নামী, দামি সরকারি আধপোড়া ওষুধ উদ্ধার, রামপুরহাটে চাঞ্চল্য
বর্তমান | ২০ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: আর জি কর ঘটনার আবহে এবার রোগীদের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত নামী দামি ওষুধ পোড়ানোর ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে রামপুরহাটে। এর মধ্যে বহু আধপোড়া ওষুধ রয়েছে, যেগুলির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়নি। তবে অভিযোগ উঠলেও এর দায় নিতে চাইছেন না কেউই। ঘটনার তদন্ত করে বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন এলাকার মানুষ।
শনিবার সকালে রানিগঞ্জ মোড়গ্রাম ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের রামপুরহাটের তারাপীঠ রোড স্টেশন ঢোকার আগে তেনেচোরা কাঁদরের পাশে ওষুধগুলো পোড়া অবস্থায় দেখেন প্রাতঃভ্রমণকারীরা। এর মধ্যে কিছু ওষুধ আধপোড়া অবস্থায় রয়েছে। যেগুলির গায়ে সরবরাহকারী হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নাম লেখা। ম্যানুফ্যাকচার ৪/২৩, এক্সপায়ারি ডেট হিসাবে লেখা রয়েছে ৩/২৫। পাশাপাশি নট ফর সেল লেখা রয়েছে। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই মুহূর্তে উৎসুক জনতার ভিড় জমে যায়। তাঁদের অনুমান, রাতের অন্ধকারে কেউ সরকারি মূল্যবান ওষুধগুলো এখানে রেখে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তাঁরা বলেন, ধুঁয়ো উড়ছে দেখে ঘটনাস্থলে যেতেই দেখি প্রচুর সরকারি ওষুধ পুড়ছে। শুনেছি মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ পুড়িয়ে দেয়। কিন্তু এক্ষেত্রে বহু আধপোড়া ওষুধ মিলেছে যেগুলির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়নি। পাশেই পড়ে রয়েছে মদের বোতল। স্বভাবতই ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাস্থলের কাছাকাছি সরকারি হাসপাতাল বলতে চাকপাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তারা অবশ্য দায় নিতে চায়নি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দ্বিতীয় এএনএম শাশ্বতী খান লেট বলেন, এই ওষুধগুলি আমাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নয়। ওষুধের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলে আমরা সেগুলি ব্লক হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই।
এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম, জয়ন্ত লেটরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ওষুধের গায়ে যখন সরকারি সিল রয়েছে। তার মানেই কোনও হাসপাতাল থেকে ওষুধগুলো নিয়ে এসে পোড়ানো হয়েছে। আর জি করের ঘটনার পর চিকিৎসক ও নার্সরা বিচার এবং নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। সেখানে হাসপাতালের বরাদ্দ ওষুধ এভাবে পোড়ানো হল, সেক্ষেত্রে তাঁদের বিচার কে করবে?
স্থানীয়রা বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়া হলে বেশিরভাগ ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়। অথচ সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকার ওষুধ পুড়িয়ে ফেলা হল। সরকারের বরাদ্দ লক্ষ লক্ষ টাকা দামের জীবনদায়ী ওষুধ গরিব মানুষকে না দিয়ে এভাবে পুড়িয়ে যাঁরা নষ্ট করলেন, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। স্বাস্থ্যদপ্তর ব্যবস্থা না নিলে ঘটনার তদন্তের দাবিতে আন্দোলনে নামা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
এব্যাপারে রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শোভন দে বলেন, কে বা কারা সরকারি এসব ওষুধ পুড়িয়েছে, তা আমার জানা নেই। মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও ওষুধ পোড়ানো যায় না। সেগুলি নির্দিষ্ট সিস্টেমে ফেরত নিয়ে আলাদা করে রাখা হয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। -নিজস্ব চিত্র