সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: কানাঘুঁষো চলছে তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশচিক বড়াইককে মাদারিহাট উপ নির্বাচনে জিতিয়ে বিধানসভায় পাঠাতে চায়। কয়েক দিন আগে ‘বর্তমান’ -এ এই খবর প্রকাশিত হয়েছিল। শনিবার সেই কানাঘুঁষো আরও গতি পেয়েছে। কারণ শীর্ষ নেতৃত্বের জরুরি তলব পেয়ে এদিন কাকভোরে বাগডোগরা থেকে উড়ান ধরে দলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি কলকাতা উড়ে যান। সঙ্গে নিয়ে যান দলের জেলা চেয়ারম্যান গঙ্গাপ্রসাদ শর্মাকেও। তাহলে কি মাদারিহাট বিধানসভার উপ নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে প্রকাশবাবুর নামের পাশেই সিলমোহর পড়তে চলেছে? যদিও তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতৃত্ব এনিয়ে একেবারে মুখে কুলুপ এঁটেছে।
তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা ফোনে বলেন, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের জরুরি তলব পেয়েই কলকাতা এসেছি। কিন্তু দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কেন কলকাতায় ডেকেছে তা বলতে পারব না। এবিষয়ে দলই বলতে পারবে। প্রকাশচিক বড়াইক বলেন, দল অনেক জেলার সভাপতিদেরও কলকাতায় ডেকেছে। ফলে এই গুঞ্জন একেবারেই অমূলক। তৃণমূল নেতৃত্ব যাই বলুক না কেন এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলের ধারণা, মাদারিহাটে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে প্রকাশবাবুর নামেই সিলমোহর পড়তে চলেছে। মাদারিহাটে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও এনিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কিন্তু তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব কেন মাদারিহাটে দলের রাজ্যসভার সাংসদকেই প্রার্থী করতে চাইছে? মাদারিহাট বিধানসভার উপ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে প্রথম থেকেই দলের ব্লক সভাপতি হিসেবে জয়প্রকাশ টোপ্পোর নাম শোনা যাচ্ছিল। দলের জেলা সভাপতিও প্রার্থী হিসাবে তাঁকেই চেয়েছিলেন।
কিন্তু তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে মাদারিহাট উপ নির্বাচনে বিধানসভা এলাকার কাউকে প্রার্থী করা হলে দলে গোষ্ঠীকোন্দল মাথাচাড়া দিতে পারে। দল একেবারেই সেই ঝুঁকি নিতে চাইছে না। তাছাড়া লোকসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে মাদারিহাট বিধানসভা আসনে তৃণমূল বিজেপির থেকে মাত্র ১১ হাজার ভোটে পিছিয়ে আছে। অর্থাৎ তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, আসন্ন উপ নির্বাচনে দলের জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা। দলীয় গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে সেই জয় অধরা থাকুক তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব তা চাইছে না।
পাশাপাশি একুশের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল খাতাই খুলতে পারেনি। জেলার পাঁচটি বিধানসভার পাঁচটিতেই জিতেছে বিজেপি। বিজেপির টিকিটে জিতে আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল অবশ্য পরে শাসক দল তৃণমূলে যোগ দেন। কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্ব সরাসরি বিধানসভা ভোটে জিতে আলিপুরদুয়ারে দলের একজন বিধায়ক চাইছে। মাদারিহাট উপ নির্বাচনে দলীয় কোন্দলের জেরে সেই সম্ভবনা গোড়াতেই নষ্ট হোক তা চাইছে না শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতিকে প্রার্থী করলে দলীয় সেই কোন্দল থাকবে না, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।