নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে পথে নামলেও আস্থা অর্জনে ব্যর্থ বিজেপির মহিলা শাখা
বর্তমান | ২০ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাংলায় নারী নির্যাতন নিয়ে সরব বিজেপি। অথচ দলের মহিলা শাখার সক্রিয়তা নিয়ে তাদের অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সাম্প্রতিক অতীতে বঙ্গ বিজেপির মহিলা শাখার তিন প্রাক্তন সভানেত্রী ছিলেন রুপোলি জগতের প্রতিনিধি। তাঁরা হলেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, লকেট চট্টোপাধ্যায় ও অগ্নিমিত্রা পল। প্রথম দু’জন সফল অভিনেত্রী। তৃতীয়জন ফ্যাশন জগতের পরিচিত মুখ। তারপর বিজেপির মহিলা শাখার প্রধান হয়েছিলেন তনুজা চক্রবর্তী। বর্তমানে গেরুয়া পার্টির মহিলা ব্রিগেডের মাথায় রয়েছেন ফাল্গুনি পাত্র। এই সময়কালে আর জি কর-কাণ্ড সহ নারী নির্যাতনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে রাজ্যে। কিন্তু রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের মহিলা শাখা এই পর্বেও কার্যত ম্লান থেকে গিয়েছে। পদ্ম শিবিরের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষাতেই দলের মহিলা শাখার এমন ‘হতাশাজনক’ ভূমিকা সামনে এসেছে বলে খবর।
এ প্রসঙ্গে ভিন রাজ্যের এক নেতা বলেন, ‘প্রদেশ বিজেপি সাংগঠনিকভাবে এখনও পরিণত নয়। মুখনির্ভর নেতৃত্ব রয়ে গিয়েছে এখনও। অর্থাৎ রাহুল সিনহা, দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার সহ প্রাক্তন কিংবা বর্তমান সভাপতির অনুগত হিসেবে অনেকে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন। কিন্তু এত বছরে সার্বিকভাবে মুখ হিসেবে কেউ উঠে আসতে পারেননি। সেই ব্যর্থতাতেই মহিলা মোর্চার ভূমিকাও জনমানসে দাগ কাটতে পারেনি।’ ওই নেতা আরও বলেন, ‘মহিলা মোর্চার প্রাক্তন তিন সভানেত্রী নিজেদের অতীতের খ্যাতিকে সামনে রেখে সংগঠনে অক্সিজেন জুগিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর তুলনামূলক কম পরিচিত দু’জন মহিলার নেতৃত্ব সার্বিকভাবে দলের কর্মী-সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। তাই সাম্প্রতিক অতীতে বিজেপির মহিলা শাখার কর্মসূচিতে বাধ্য হয়ে প্রাক্তন সভানেত্রীদের হাজির হতে হয়েছে।’
তবে রাজ্য বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘মহিলা মোর্চা সহ দলের সাতটি শাখার হাত-পা বাঁধা রয়েছে। যেকোনও সামান্য সিদ্ধান্ত নিতে গেলেও কিছু তৎকাল মাতব্বরের অনুমতি নিতে হয়। সেখানে বিভিন্ন লবির চাপাচাপি রয়েছে। ফলে নতুন উদ্যমে কোনও কর্মসূচি নেওয়ার উৎসাহ হারাচ্ছে মহিলা মোর্চার নেতৃত্ব।’ তাঁর কথায়, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে গোহারা হারের প্রভাব এখনও কাটিয়ে ওঠা যায়নি। তার উপর লক্ষ্মীর ভাণ্ডার মহিলা মহলে তৃণমূলকে বহু যোজন এগিয়ে দিয়েছে। তার পাল্টা কোনও কর্মসূচি নেই বিজেপির কাছে। স্বভাবতই ধারাবাহিক নারী নির্যাতন সত্ত্বেও বঙ্গনারীদের সার্বিক সমর্থন পেতে ব্যর্থ বিজেপির মহিলা শাখা।