১০ মাসে তিনবার জলদস্যুদের হামলা, আতঙ্কে সুন্দরবনের মৎস্যজীবীরা
বর্তমান | ২০ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: চলতি বছরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন ২৭ জন মৎস্যজীবী। এখনও পর্যন্ত তিনবার হামলা হয়েছে। ফলে চরম আতঙ্ক গ্রাস করেছে তাঁদের। কারণ, পরপর ঘটনা ঘটলেও সেভাবে কেউ ধরা পড়েনি বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে অনেকে মাছ ধরতেই যেতে চাইছেন না। কিন্তু নদীতে না গেলে অনাহারে দিন কাটাতে হবে। সব মিলিয়ে আতান্তরে পড়েছেন ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা সহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকার মৎস্যজীবীরা। তাঁদের দাবি, মাছ-কাঁকড়া ধরার পর রাতে সুন্দরবনে বনদপ্তরের যে সমস্ত ক্যাম্প রয়েছে, তার পাশে মৎস্যজীবীদের নৌকা নোঙর করতে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক। তাহলে অন্তত জলদস্যুদের হামলা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর থেকে আতঙ্ক যেন পিছু ছাড়ছে না মৎস্যজীবী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের। সুন্দরবন উপকূল থানায় লিখিত অভিযোগ করার পর এখনও অধরা জলদস্যুরা। তবে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, লুটপাট চালানোর সময় মৎস্যজীবীদের মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায় জলদস্যুরা। পরে সেই মোবাইল ফোন বেশ কয়েকবার ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা বলছেন, আগের দু’টি ঘটনায় মোবাইল ব্যবহার করেনি দস্যুরা। এবার মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ধরে দুষ্কৃতীদের পাকড়াও করার আপ্রাণ চেষ্টা চলছে। প্রসঙ্গত, গত ২৫ জানুয়ারি মৎস্যজীবীদের চারটি নৌকা জলদস্যুদের কবলে পড়ে। ১৬ জন মৎস্যজীবীর সর্বস্ব লুট করে নেওয়া হয়। এরপর ২৫ আগস্ট ১৫০ কেজি কাঁকড়া ও একটি নৌকা নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। গত বৃহস্পতিবার ফের জলদস্যুরা হানা দেয় নৌকায়।
কয়েকজন মৎস্যজীবী বলেন, ‘বারবার একই ঘটনা ঘটছে। এখন আমরা হতাশা নিয়ে বেঁচে আছি সবাই। কেউ আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দূরে মাছ- কাঁকড়া ধরতে যেতে চাইছে না।’ সুন্দরবন মৎস্যজীবী রক্ষা কমিটির সভাপতি প্রশান্ত রায় বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে বারবার বনদপ্তরের আধিকারিক ও পুলিস প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের আলোচনা করা হয়েছে। মৌখিক আশ্বাস ছাড়া তাদের তরফে আর কিছুই মেলেনি।’