সংস্কারের জেরে সুতি নদী পাড়ের বাড়িতে ফাটল, ক্ষোভ দত্তপুকুরে
বর্তমান | ২০ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: চলছে সুতি নদী সংস্কার। কিন্তু সেই কাজ চলাকালীন নদীর পাড়ে থাকা বসতিতে ধরছে ফাটল। দত্তপুকুরের কাশিমপুর পঞ্চায়েতের জুবলি ঘাট এলাকায় এমন ঘটনা ঘটায় নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে শুরু করেছেন বাসিন্দারা। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের কাছে অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়ে শনিবার দুপুরে নীলগঞ্জ রোড কিছু সময়ের জন্য অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে দত্তপুকুর থানার পুলিস গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি সেচদপ্তরের জায়গা জবরদখল করে রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উত্তর ২৪ পরগনার বুক চিরে বয়ে যেত ভাগীরথীর শাখা সুতি নদী। এই নদীর তীরেই গড়ে উঠেছিল বসতি। উর্বর জমিতে চাষ থেকে নদীতে মাছ ধরে জীবিকা চালাতেন সেই বাসিন্দারা। এই নদীই ছিল জেলার জলনিকাশির অন্যতম মাধ্যম। অশোকনগর, দত্তপুকুর, বারাসতের উপর দিয়ে সুতি নদী গিয়ে মিশেছে হাড়োয়া খালে। কিন্তু জবরদখল থেকে শুরু করে আবর্জনা পড়ে পড়ে মজে গিয়েছে সেই নদী। নদীটি পরিণত হয়েছে খালে। অল্প বৃষ্টিতেই জলমগ্ন হয় সুতি খাল সংলগ্ন এলাকা। তাই, সাধারণ মানুষের দাবিকে মান্যতা দিয়ে সুতি সংস্কারের কাজ শুরু করেছে সেচদপ্তর। অশোকনগরের দিঘড়া এলাকা থেকে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। নদীগর্ভের অনেকটা গভীর থেকেই পলি কাটার কাজ শুরু হয়। ফলে, জলের স্বাভাবিক গতি ফিরছিল। কিন্তু বিপত্তি হল দত্তপুকুরের কাশিমপুর পঞ্চায়েতের জুবলিঘাট এলাকায়। সেখানে নদীর তীরে একাধিক বাড়ি তৈরি হয়েছে, কারখানাও রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সুতি সংস্কারের জন্য জুবলি ঘাট সংলগ্ন ১০ থেকে ১৫টি বাড়িতে ফাটল ধরেছে। গভীর করে পলি কাটার ফলে মাটিতে ধস নেমেই এই বিপত্তি। পাশাপাশি দু’দিনের বৃষ্টির ফলে ধসের পরিমাণ আরও বেড়ে গিয়েছে। ফলে শুক্রবার সন্ধ্যার পর বাড়িগুলির ফাটলও বেড়ে গিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সুরজিৎ কংসবনিক, নিপা কংসবনিকরা বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যার পর ফাটল বেড়েছে। যে কোনও বাড়ি ভেঙে পড়তে পারে। আমরা তাই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র থাকছি। কাশিমপুর পঞ্চায়েতের প্রধান মেঘনাদ দাস বলেন, মানুষের দাবিকে গুরুত্ব দিয়েই সুতি সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি সেচদপ্তরের জমিতে রয়েছে কি না, সেটা প্রশাসন দেখছে।
এনিয়ে পরিবেশবিদ সুকুমার মিত্র বলেন, জনস্বার্থে সুতি সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ায় ভালো হয়েছে। যে বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা নদীর জায়গা দখল করে রয়েছে কি না তা দেখা উচিত।