• খুন না আত্মহত্যা? তিন দিন পরেও উত্তর অজানা, অকুস্থলে পিএম-এক্সপার্ট
    এই সময় | ২০ অক্টোবর ২০২৪
  • এই সময়, কৃষ্ণনগর: দেহ উদ্ধারের তিন দিন পরেও কৃষ্ণনগরে তরুণী ছাত্রীর মৃত্যু রহস্য অধরা। ওই ছাত্রীর ময়নাতদন্ত যিনি করেছিলেন, কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালের সেই চিকিৎসক সৌম্যজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার কৃষ্ণনগরে গিয়ে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরির আগে এটা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ময়নাতদন্তের চিকিৎসককে সচরাচর অকুস্থলে আসতে দেখা যায় না। তাহলে হঠাৎ কী কারণ? সৌম্যজ্যোতি বলেন, ‘বিধি মেনেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।’ এ দিনই পুলিশের কাছে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন তিনি।বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন ফিঙ্গার প্রিন্ট এক্সপার্টরা। শুক্রবার নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেন্সিক টিমের সদস্যরা। তবে এই রহস্যমৃত্যু খুন নাকি আত্মহত্যা, জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এ দিনও পরিষ্কার ভাবে কিছু বলা হয়নি।

    তবে দুপুরে কৃষ্ণনগরে গিয়ে মৃতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘ওখানেও আমার সোর্স আছে। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ‘আত্মহত্যা’ বলে লেখা থাকবে।’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘জয়নগরের ঘটনায় কল্যাণী এইমসের ডাক্তাররা পোস্ট মর্টেম না করলে রিপোর্টে ‘সুইসাইড’ লেখা হয়ে যেত। এখানকার ঘটনায় পুলিশ তৃণমূলের ডাক্তারদের দিয়ে পোস্টমর্টেম করিয়ে সুইসাইড লিখিয়েছে। আর এখানে যাকে ধরেছে তারও শাস্তি হবে না। কোতয়ালি থানার পুলিশ ধামাচাপা দিচ্ছে।’

    শুভেন্দু এ দিন জোর দিয়ে বলেন, ‘পরিবারের সঙ্গে একযোগে আমরাও বলছি শারীরিক নির্যাতন করে খুনের ঘটনা এটি। এক জায়গায় খুন করে আরেক জায়গায় দেহ ফেলা হয়েছে। ছাত্রীর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে যে পোস্ট মিলেছে এবং সমাজ মাধ্যমে ছড়ানো অডিয়ো ক্লিপ জোর করে করানো হয়েছে। পরিবার চাইছেন কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে তদন্ত করাতে। পরিবার চাইলে আমরা হাইকোর্টে আইনজীবী দিয়ে পরিবারের পাশে থাকব বলেছি।’

    এদিন ময়না তদন্ত করা চিকিৎসকের ঘটনাস্থল পরিদর্শন প্রসঙ্গে বারাসাত মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক মেডিসিন অ্যান্ড টক্সিকোলজির চিকিৎসক অরিন্দম চক্রবর্তী বলেন, ‘পরিভাষায় এটিকে বলা হয় পিওওভি। প্লেস অফ অকারেন্স ভিজিট। এটা পদ্ধতির মধ্যে আছে। তবে সব সময়ে দরকার হয় না। যদি কোনও কনফিউশন থাকে, কিছু তথ্য মিলিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন হয়, স্পট ভিজিট করতে পারেন ময়নাতদন্তের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক।’

    পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ন’টা পঞ্চাশের পর থেকে এগারোটা পর্যন্ত ধৃত যুবক রাহুল বসুর মোবাইলের টাওয়ার কৃষ্ণনগর কলেজ মাঠের কাছে ছিল। আর মৃত তরুণীর মোবাইলের টাওয়ার লোকেশনও রাত আটটা থেকে পরের দিন দেহ উদ্ধারের আগে পর্যন্ত কলেজ মাঠ সংলগ্ন ডাকবাংলো মোড় এলাকায় পাওয়া গিয়েছে। যদিও তরুণীর সঙ্গে ওই রাতে দেখা হয়নি বলে আগেই দাবি করেছিল অভিযুক্ত রাহুল। পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির নির্দেশ মেনে সকাল ১১টা থেকে এক ঘণ্টা নদিয়া জেলার সব থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস কর্মীরা।
  • Link to this news (এই সময়)