কালীপুজোর আগে বাড়ছে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা, কোমর বেঁধে তৈরি নবান্নও
প্রতিদিন | ২০ অক্টোবর ২০২৪
নিরুফা খাতুন: ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা আরও প্রবল হচ্ছে। শনিবার মধ্য আন্দামান সাগরে তৈরি হয়েছে ঘূর্ণাবর্ত। এটি বুধবারে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। দুর্যোগের মোকাবিলা করতে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিলেন মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ।
বৃহস্পতি থেকে শনিবারের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরির হওয়ার আশঙ্কা করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। যার নাম হতে চলেছে ‘ডানা’। এই ঘূর্ণিঝড় ওড়িশা, অন্ধপ্রদেশ অথবা বাংলাদেশের দিকে আছড়ে পড়তে পারে বলে অনুমান করছে আন্তর্জাতিক মডেলগুলি। বাংলায় এর কতটা প্রভাব পড়বে তা স্পষ্ট নয়। তবুও ঝুঁকি নিতে নারাজ রাজ্য সরকার। দুর্যোগ মোকাবিলা করতে তাই সবরকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরকে। এদিন নবান্ন মুখ্যসচিব জেলা প্রশাসকদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন। নবান্ন সূত্রে খবর, ওই বৈঠকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে জেলাশাসকদের বলা হয়েছে। বিশেষ করে উপকূলবর্তী এলাকায় বাঁধগুলি কেমন রয়েছে তা সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। এলাকাবাসী ও মৎস্যজীবীদের সতর্ক করা। ত্রাণ শিবির খোলা। পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত করে রাখতে হবে।
আন্তর্জাতিক মডেলগুলির তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতি থেকে শনিবারের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে চলেছে। যার গতিবেগ ঘন্টায় ১২০ কিমি হতে পারে। সেটি ওড়িশা থেকে বাংলাদেশের বরিশালের মধ্যে কোথাও আছড়ে পড়তে পারে। যদিও আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর ঘূর্ণিঝড় নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সতর্কতা জারি করেনি। শনিবার আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, “আন্দামান সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। সোমবার মধ্য বঙ্গোপসাগরে এসে এটি নিম্নচাপে পরিণত হবে। শক্তি বাড়িয়ে বুধবার অতি গভীর নিম্নচাপে রূপ নিয়ে মায়ানমার বা অন্ধ্রের যে কোনও উপকূলের স্থলভাগে প্রবেশ করবে। ফলে উত্তাল থাকবে সমুদ্র। মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে নামার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ইতিপূর্বে মধ্য আরব সাগরে একটি নিম্নচাপ হয়েছে। দুদিন পর এই নিম্নচাপ পশ্চিমবঙ্গ উত্তর পশ্চিম দিকে ভারতীয় উপকূল বিপরীতে সরে যাবে। এই নিম্নচাপ এলাকা থেকে অন্ধ্র উপকূল পর্যন্ত একটি অক্ষরেখা রয়েছে যেটি কর্ণাটকের উপর দিয়ে গিয়েছে।”
মঙ্গল থেকে আবার হাওয়া বদল হবে। বুধবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর। উল্লেখ্য, দুর্গাপুজোর আগেই বন্যায় বাংলার একাধিক জেলা বিধ্বস্থ। কালীপুজোর আগে ফের দুর্যোগের আশঙ্কা করছে বাংলা। গত মে মাসে সাগরে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় রেমাল। সুন্দরবনকে লণ্ডভণ্ড করে গিয়েছিল।