• ‘উপনির্বাচনে লড়তে চাইনি’, প্রার্থী না হওয়া নিয়ে মুখ খুললেন দিলীপ
    এই সময় | ২০ অক্টোবর ২০২৪
  • তুহিনা মণ্ডল, সমীর মণ্ডল | এই সময় অনলাইনমেদিনীপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে দিলীপ ঘোষের নাম নিয়ে শুরু হয়েছিল জোর চর্চা। দলের একটা অংশ মনে করেছিল, মেদিনীপুরে দিলীপকে টিকিট দিয়ে তাঁর ‘অভিমান’ খানিক ভাঙানো যাবে। সঙ্গে লড়াইও হবে ভালো। আবার একটা অংশের মতে, মানস ভুঁইঞাকে হারানো প্রাক্তন সাংসদ দিলীপকে বিধানসভার টিকিট দেওয়া কিছুটা তাঁর মর্যাদা ক্ষুন্ন হওয়ার সমান। ফলে দল সেই কাজ করবে না। এ সবের মধ্যেই, বিজেপি এই কেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছে পেশায় আইনজীবী, যুবনেতা শুভজিৎ রায়কে। মেদিনীপুর-খড়গপুরে থাকা দিলীপের অনুগামীদের একটা অংশ, দলের এই সিদ্ধান্তে বেশ অসন্তষ্টই।

    মেদিনীপুরে দল জেতা শুরু করেছে আমি আসার পর থেকেদিলীপ ঘোষ

    ২০১৬ সালে মেদিনীপুর বিধানসভার পাশের কেন্দ্র খড়গপুর সদর বিধানসভা থেকে জয়লাভ করেছিলেন দিলীপ। কংগ্রেসের হেভিওয়েট প্রার্থী ছিলেন জ্ঞান সিং সোহনপাল। তাঁকে হারানো যে সহজ ছিল না-তা আজও একবাক্যে শাসক-বিরোধী সব পক্ষের নেতারা স্বীকার করেন। সেই 'জায়ান্ট কিলার' কেন উপনির্বাচনেও প্রার্থী নন? এ বার তা নিয়ে মুখ খুললেন স্বয়ং দিলীপ ঘোষ। ‘এই সময় অনলাইন’-কে তিনি জানালেন, উপনির্বাচনে লড়তে চান না বলে নিজেই দলকে জানিয়েছিলেন।

    জেলা বিজেপির অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায়, প্রার্থী হিসেবে জেলা বিজেপি নেতৃত্বের তরফে যে প্রস্তাবিত ৫ নাম রাজ্য নেতৃত্বের কাছে গিয়েছিল, তাঁর মধ্যে অন্যতম ছিল দিলীপ ঘোষ। বাকি কয়েকজন মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলারই নেতা। যাঁদের আবার কয়েকজনের উত্থান দিলীপের হাত ধরেই। মেদিনীপুর জেলা বিজেপির সভাপতি সুদাম পণ্ডিত বলেন, 'দলের কর্মীরাই দিলীপ ঘোষকে উপনির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে চেয়েছিলেন। যে পাঁচটি নাম সকলের সম্মতিতে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়েছিল, তার মধ্যে দিলীপবাবুর নামও ছিল। কিন্তু পরে ফোন করে আমাকে বলেছিলেন উপনির্বাচনে তিনি লড়তে চান না।'

    কিন্তু যাঁকে নিয়ে এত চর্চা কী বলছেন সেই দিলীপ? তিনি বলেন, ‘আমি দলকে বলেছিলাম, উপনির্বাচনে লড়ব না। তাই তারা অন্য নাম ঠিক করেছে।’ তবে মনোনয়ন পর্ব থেকে শুরু করে অন্য কর্মসূচিতে তিনি থাকবেন বলেও দাবি করেছেন।

    উল্লেখ্য, ২০২১ সালে মেদিনীপুর ছিল তৃণমূলের জেতা আসন। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রও ২০২৪-এ গিয়েছে তৃণমূলের ঝুলিতেই। ফলে উপনির্বাচনে তা রাজ্যের শাসক দলের ‘এক্সট্রা অ্যাডভান্টেজ’ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আর এই অবস্থাতেই একসময় মেদিনীপুরের ‘দামাল ছেলে’ দিলীপ ঘোষকে ভোট ময়দানে চায়ছিলেন জেলা বিজেপি কর্মীদের একাংশ। দিলীপ ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘মেদিনীপুরে দল জেতা শুরু করেছে আমি আসার পর থেকে। আমি খড়গপুর সদর বিধানসভায় জিতেছিলাম। মেদিনীপুর লোকসভায় জয়ী হয়েছিলাম। এখন যেহেতু আমি দলের কোনও পদে নেই অনেকেই দাবি করছিলেন আমি যেন উপনির্বাচনে লড়ি। এদের অনেকের সঙ্গে আমি কাজ করেছি। তাই আমার নাম নেয়।’

    রবিবার উপনির্বাচনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতেই মেদিনীপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী খড়গপুরে দিলীপ ঘোষের বাংলোতে যান। প্রার্থীকে মালা পরিয়ে, মিষ্টি মুখ করিয়ে দিলীপ ঘোষ বললেন, ‘এ রাজ্যে দলের কোনও দায়িত্বে আমি নেই। ত্রিপুরায় কাজ করার দায়িত্ব দিয়েছে দল। আমার আশীর্বাদ রইলো আমাদের দলের প্রার্থীর জন্য।’
  • Link to this news (এই সময়)