এই সময়, পুরুলিয়া: বরাবাজারের ফতেপুরে বালির চরে পুঁতে রাখা যুবতীর নাম-ধাম এখনও জানা না গেলেও পরিচয় পাওয়া গেল মানবাজারে কুমারী নদী থেকে উদ্ধার হওয়া মৃত মহিলার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নদীতে মহিলার দেহটি ভাসতে দেখা যায়। শনিবার একটি চশমা দেখে মায়ের মৃতদেহ শনাক্ত করেন ছেলে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম উমারানি দে (৭০)। তাঁর বাড়ি মানবাজার ব্লক সদরের পোদ্দার পাড়ায়।মৃতার পুত্রবধূ চম্পা দে বলেন, ‘গত বুধবার সকাল থেকে তিনি বাড়িতে ছিলেন না। এর আগে বলেছিলেন বোরো থানার মামরো গ্রামে বাপের বাড়ি যাবেন। তবে তিনি সেখানে যাননি। এর আগেও বেশ কয়েক বার বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি।’ এ দিন পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালের মর্গে এসে মায়ের দেহ শনাক্ত করে ছেলে পূর্ণেন্দু দে বলেন, ‘কোনও খোঁজ না পেয়ে নিখোঁজ ডায়েরি করি থানায়। পরে খবর দেখে জানতে পারি কুমারী নদীতে এক মহিলার দেহ ভেসে এসেছে।’ তাঁর সন্দেহ হয়, ভেসে আসা মহিলার দেহ তাঁর মায়ের হতে পারে। পুলিশ তাঁকে একটি চশমা দেখায়। সেটা দেখেই তিনি বুঝতে পারেন এটি তাঁর মায়ের চশমা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কুমারী সেতুর নীচে কিছুটা দূরে দেহটি ভাসছিল। মানবাজার এবং বোরো থানার সংযোগস্থলে এই সেতুর ঠিক মাঝামাঝি চশমাটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। এতে সন্দেহ দৃঢ় হয় যে, চশমাটি ওই মহিলার। তিনি সেতু থেকে ঝাঁপ দিতে পারেন। পরিবারে বৃদ্ধাকে নিয়ে কোনও অশান্তির কথা স্বীকার করেননি তাঁর ছেলে। জেলার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ওই মহিলার ময়না-তদন্তে হত্যার কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি।’
এ দিকে, বরাবাজারের ফতেপুর নদীঘাটে বালিতে পুঁতে দেওয়া যুবতীর পরিচয় এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ড থেকেই এই অপরাধ হয়েছে এমনটা ধরে তদন্ত জোরদার করছে পুলিশ। পুলিশের একাধিক টিম ঝাড়খণ্ডে যুবতীর পরিচয় জানার চেষ্টা করছে। অন্য দিকে, রাজ্যেরও বিভিন্ন থানা এলাকায় নিখোঁজ থাকা যুবতীদের তালিকা বার করছে পুলিশ। আরও বিভিন্ন সূত্র ধরে মেয়েটির পরিচয় বার করতে কার্যত আদাজল খেয়ে লেগে পড়েছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। এক কর্তার কথায়, পরিচয় না পাওয়া পর্যন্ত তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে উঠছে। তাই সবার আগে ওই যুবতীর আসল পরিচয় বার করতে হবে।