আগুনে পুড়েই মৃত্যু হয়েছে কৃষ্ণনগরের তরুণীর, উল্লেখ ময়নাতদন্তের রিপোর্টে
এই সময় | ২১ অক্টোবর ২০২৪
আগুনে পুড়েই মৃত্যু হয়েছে কৃষ্ণনগরের তরুণীর। এমনটাই উল্লেখ রয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট কি আত্মহত্যার দিকেই ইঙ্গিত করল? সে প্রশ্ন ফের একবার জোরালো হয়েছে। যদিও জেলা পুলিশ মৃত্যুর কারণ নিয়ে আরও তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছে। ঘটনার ৪ দিন পরেও কৃষ্ণনগরে তরুণীর মৃত্যু খুন না আত্মহত্যা, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। শরীরে মৃতের ‘বার্ন ইনজুরি’ ছাড়া অন্য কোনও আঘাত নেই বলেও উল্লেখ রয়েছে। চিকিৎসার পরিভাষায় ‘অ্যান্টি মর্টেম’ অর্থাৎ জীবন্ত অবস্থাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে, সে কথাও উল্লেখ রয়েছে।রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘নির্যাতিতা’-র শরীরের ৯০ শতাংশের বেশি আগুনে পুড়ে গিয়েছে। মাথার চুল, দুটো হাত ও মুখের সিংহভাগ পুড়ে যায়। শরীরের নীচের অংশের অনেকটা, বুক পুড়ে গিয়েছে। শরীরের পুড়ে যাওয়া অংশের ক্ষত থার্ড বা ফোর্থ ডিগ্রি বার্নের। পাশাপাশি নির্যাতিতার শ্বাসনালীতে কার্বনের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে।
উল্লেখ্য, ঘটনাস্থল থেকে আগে একটি কেরোসিনের বোতল ও দেশলাই বাক্স উদ্ধার করা হয়েছিল। ফরেন্সিক দল বোতল ও দেশলাই বাক্স থেকে আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করেছে। সেটিকে মৃত তরুণীর আঙুলের ছাপের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। ঘটনাস্থলেই আগুন লাগানোর ঘটনাটি ঘটেছিল কিনা, সে ব্যাপারেও তদন্ত করা হচ্ছে।
রহস্য দূর করতে অভিযুক্ত যুবক ও ওই ছাত্রীর ফোনের কললিস্ট, টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার রাতে তরুণীর ঠিক কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, কার কার সঙ্গে দেখা করেছিলেন, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে তদন্তকারী দল। রবিবার কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানায় এসে পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশনের সদস্য দেবযানী মুখোপাধ্যায়। দেখা করেন তরুণীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও।
এ দিন শহরের একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামনে এসেছে। যেখানে মঙ্গলবার রাতে ১০টা ৪০ মিনিটে একাই হেঁটে যেতে দেখা গিয়েছে ওই তরুণীকে। ঘটনাটি তবে কি আত্মহত্যার? সেক্ষেত্রে কিন্তু একাধিক প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি। যেমন, তরুণী যদি আত্মহত্যাই করে থাকেন তবে গায়ে আগুন লাগানোর পর তাঁর চিৎকার কেউ টের পেল না? ব্রেক আপের কারণেই কি সে এই কাজ করেছে? তাতেও রয়েছে ধোঁয়াশা। কারণ ধৃত রাত ১০টা নাগাদ ফোনে সম্পর্কে ছেদ টানার কথা জানায়। অল্প সময়ে কেরোসিনের মতো দাহ্য পদার্থই কী করে ওই তরুণী জোগাড় করল। কারণ, কেরোসিন খুব সহজে এখন কোনও দোকানে মেলে না। এরকম আরও একাধিক প্রশ্নের উত্তর এখনও কিন্তু মেলেনি।