এই সময়: বছরের বেশির ভাগ সময়েই ব্যবসায় মন্দার অভিযোগ করেন শহর ও শহরতলির বেসরকারি বাস মালিকরা। তবে সদ্য শেষ হওয়া দুর্গাপুজোয় টিকিট বিক্রিতে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি দেখে অনেকটা খুশি তাঁরা। এই সাময়িক লাভে অবশ্য নিজেদের দাবি থেকে সরছেন না। ভাইফোঁটার পরের কর্মসূচি ছকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের পরিকল্পনা করছেন এঁদের একাংশ। তাঁদের হুঁশিয়ারি — যে ক’দফা দাবি নিয়ে গত দু’তিন বছর ধরে লড়াই চালাচ্ছেন, সেগুলি পূরণ না হলে বাস ধর্মঘটের পথেও যেতে পারেন।সরকারি স্বীকৃতি না থাকলেও অনেক বেসরকারি বাসই কোভিড-পর্বের পর নিজেদের মতো করে ভাড়া বাড়িয়ে নিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে আপত্তি জানালেও পরে সেটা মেনে নিতে একরকম বাধ্য হয়েছেন যাত্রীরা। বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠন অবশ্য ভাড়াবৃদ্ধির কথা মানতে নারাজ। তাদের দাবি, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং কয়েক বছর ধরে ভাড়া না-বাড়ায় পরিস্থিতি সামলাতে যাত্রীদের থেকে সামান্য কিছু ‘অনুদান’ চাইছেন বাসকর্মীরা। যাত্রীরাও এতে আপত্তি করছেন না। এ বার সেই ‘অনুদান’-এই সরকারি অনুমোদন চাইছেন মালিকের দল।
তাঁদের আরও অভিযোগ, পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের অত্যাচার, জাতীয় সড়কে টোল আদায়ের পদ্ধতিতে অসামঞ্জস্য এবং টোটোর সংখ্যা বাড়ায় বাসের ব্যবসা মার খাচ্ছে। ক’বছর ধরে এ নিয়ে রাজ্য পরিবহণ দপ্তরে দরবার করেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে মালিকদের অভিযোগ। তাঁরা অনেকদিন ধরে ‘কঠিন পদক্ষেপ’-এর হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছেন।
বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠন ‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘পুজোর ক’দিন ভালো ব্যবসা করা আর বছরের বাকি দিনগুলোয় হাত গুটিয়ে বসে থাকা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। ভাইফোঁটার পর আন্দোলন শুরু করব, প্রয়োজনে ধর্মঘট হবে।’ রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী অবশ্য স্পষ্ট বলেছেন, ‘বাসের ভাড়া বাড়ানোর কোনও পরিকল্পনা নেই আমাদের। ওঁরা অনুদানের নামে যেটা করছেন, সেটা সম্পূর্ণ বেআইনি। সরকারের খাতায় ভাড়ার যে স্ল্যাব ঠিক করা আছে, সেই স্ল্যাব বাড়ানো হবে না।’
উত্তরবঙ্গের বেরকারি বাস মালিকদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রণব মানি বলেন, ‘পুজোর কয়েক সপ্তাহ আগে প্রবল বৃষ্টি ও বন্যার জন্য বেসরকারি বাসের ব্যবসা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই ক্ষতি পুজোয় মেক-আপ হয়নি। আমাদের চাই দীর্ঘমেয়াদি সমাধান।’