সংবাদদাতা, কান্দি: একটি মারপিটের মামলায় অভিযুক্তদের ধরতে গিয়ে মহিলাদের বাধার মুখে পড়ল পুলিস। বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি পুলিসের গাড়ির চাবিও কেড়ে নিয়ে পালায় মহিলারা। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটে বড়ঞা থানার বেলডাঙা গ্রামের ফরাজিপাড়ায়। পরে সেখানে বিশাল পুলিসবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। চাবিটিও উদ্ধার করা হয়। পরে মারপিটের মামলায় পুলিস দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামের দু’টি পরিবারের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছে। কিছুদিন আগে গ্রামের একটি চায়ের দোকানে দুই পরিবারের দুই সদস্যর মধ্যে হাতাহাতি হয়। যদিও সেইসময় স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিসের তৎপরতায় ঝামেলা বেশি দূর গড়ায়নি। এরপর গত ৩০ সেপ্টেম্বর একটি নালা সংস্কার করাকে কেন্দ্র করে ওই দুই প্রতিবেশীর মধ্যে ফের সংঘর্ষ বাধে। তাতে দু’পক্ষের কয়েকজন জখম হয়। এই ঘটনায় একপক্ষ ১৪জনের নামে অভিযোগ দায়ের করে। অপরপক্ষ ১৮জনের নামে অভিযোগ দায়ের করে। বড়ঞা থানার পুলিস দু’টি ঘটনাতেই মামলা রুজু করেছে।
এদিন সকালে পুলিস অভিযুক্তদের ধরতে ওই গ্রামে গিয়েছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিসের গাড়ি গ্রামে পৌঁছতেই চাঞ্চল্য দেখা দেয়। পুলিস অভিযুক্তদের শনাক্ত করার জন্য বাসিন্দাদের সাহায্য নেয়। মাঠে চাষ করতে যাওয়া দুই অভিযুক্তকে ধরে আনার চেষ্টা করে। তারপরেই পুলিসকে ঘিরে মহিলারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। বিক্ষোভ চলার পর এক মহিলা পুলিসের গাড়ির চাবিও খুলে নিয়ে পালায়। কিছুক্ষণ পরেই সেখানে বড়ঞা থানার ওসি অতনু দাস সহ বিশাল পুলিসবাহিনী গ্রামে পৌঁছয়। মহিলাদের তাড়া করে পুলিস সেখান থেকে হটিয়ে দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দা সফিকুল শেখ বলেন, পুলিস শুধুমাত্র একপক্ষের অভিযুক্তদের ধরছিল। অপরপক্ষের অভিযুক্তরা পুলিসকে দেখিয়ে দিচ্ছিল কাকে ধরতে হবে। এনিয়েই ঝামেলার সূত্রপাত। নবমশ্রেণির ছাত্রী সলমা বেগম বলে, পুলিস আমার বাবাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু অপরপক্ষের অভিযুক্তরা পুলিসের পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও তাদের ধরছিল না। আমি এই ঘটনার কথা বলাতে পুলিস আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তাতেই মহিলারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অপর মহিলা পলি সলুতানা বলেন, পুলিস শুধু একপক্ষের অভিযুক্তদের ধরছিল তাই নয়। মহিলাদের সঙ্গেও অশালীন আচরণ করেছে।
যদিও বড়ঞা থানার এক অফিসার জানিয়েছেন, এদিন অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে গেলে গ্রামের কয়েকজন পুলিসের কাজে বাধা সৃষ্টি করেছিল। তবে পুরনো একটি মামলায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রামে পুলিসি টহল চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কান্দির এসডিপিও শাশ্রেক আম্বারদার বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে শুনেছি। বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।