• দীর্ঘদিন পর ভূমিপুত্রে ভরসা, স্বস্তি তৃণমূলে
    বর্তমান | ২১ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: মেদিনীপুর বিধানসভার উপ নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী ভূমিপুত্র সুজয় হাজরা।  ‘বর্তমান’-এ সেই সম্ভাবনার কথা আগেই জানানো হয়েছিল। কয়েকবছর অপেক্ষার পর ফের মেদিনীপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে ভূমিপুত্র প্রার্থী হওয়ায় খুশি দলের কর্মী সমর্থকরা। ব্যানারে তৃণমূলের স্লোগান ‘মেদিনীপুর জয় করবে, মেদিনীপুরেরই ছেলে সুজয়’। এদিন দুপুরে তৃণমূলের তরফে উপ নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে সুজয়বাবুর নাম ঘোষণা করা হয়। ঘোষণার পর আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। সুজয়বাবুর কার্য্যালয়ে শুরু হয় মিষ্টিমুখ করানোর পালা। এদিন বিকেলেই দেওয়াল লেখায় নেমে পড়েন উৎসাহিত কর্মীরা। তৃণমূল নেতৃত্ব জানাচ্ছে, আজ অর্থাৎ সোমবার থেকে জোরকদমে প্রচার শুরু হবে। ইতিমধ্যেই প্রচারের রূপরেখা তৈরি হয়েছে। বসে যাওয়া কর্মীদের ভোটের ময়দানে নামানোর পরিকল্পনা করেছে নেতৃত্ব।  


    তৃণমূল প্রার্থী সুজয় বলেন, প্রথমবার ভোটে লড়াই করছি। এত বড় দায়িত্ব দেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। যে কোনও লড়াই কঠিন হয়। তবে চোখে চোখ রেখে লড়াই হবে। তিনি আরও বলেন, মানুষের পাশে সর্বদা তৃণমূল আছে। বন্যা পরিস্থিতির সময়ও তৃণমূল মানুষে পাশে ছিল। বাকি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে তখন খুঁজে পাওয়া যায়নি। আর আর জি কর কাণ্ডের প্রভাব ভোট বাক্সে পড়বে না। 


    প্রসঙ্গত,  উপ নির্বাচনের দামামা বাজতেই তৃণমূলের তরফে কে প্রার্থী হবেন তা নিয়ে জল্পনা দেখা দেয়। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে প্রার্থী আগের বারের মতোই বহিরাগত কেউ হবেন, নাকি ভূমিপুত্র। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও প্রার্থী নিয়ে জোর বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। সেই সময়ে প্রার্থী হিসেবে প্রথম সারির বেশকিছু নেতার নাম উঠে এসেছিল। মেদিনীপুরের প্রথম সারির বেশকিছু নেতা প্রার্থী হওয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতও হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষমেশ প্রার্থী হিসেবে বহিরাগত অভিনেত্রী জুন মালিয়ার নাম ঘোষণা করা হয় দলের তরফে। তাতে তৃণমূলের অন্দরে ক্ষোভের বাতাবরণ সৃষ্টি হয়েছিল। সেই সময় জেলার প্রথমসারির বহু নেতা ক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছিলেন। বিধানসভা এলাকাজুড়ে তৃণমূলের অন্দরে গেল গেল রব উঠেছিল। তবে তৃণমূল হাই কম্যান্ডের নির্দেশে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। একুশের নির্বাচনে সম্মিলিত লড়াইয়ে জয়ী হন জুন মালিয়া। এরপর ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে ফের জুন মালিয়াকে প্রার্থী করে তৃণমূল। সেই ভোটেও জুন জয়ী হন। ফলে মেদিনীপুর বিধানসভা আসনটি শূন্য হয়। লোকসভা ভোটের পর থেকেই উপ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে তৃণমূল। একইসঙ্গে এবার মেদিনীপুরের ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করার দাবি উঠতে শুরু করে। সেই দাবিকে অবশেষে মান্যতা দিল রাজ্য নেতৃত্ব।


    তৃণমূলের এক নেতা বলেন, সুজয়বাবুর ভোট পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। একইসঙ্গে ভোট পরিচালনা করার জন্য লোকবলও রয়েছে। সেই মতো জোরকদমে প্রচার করার নির্দেশ এসেছে। তবে গ্রামীণ এলাকা ও শহরেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। যা ভোটের আগে একমাত্র দুশ্চিন্তার কারণ। 


    এদিন জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, বিজেপি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত। শহরের মানুষ আর তৃণমূলের সঙ্গে নেই। গ্রামীণ এলাকার মানুষও তৃণমূলের রূপ বুঝতে পারছে। এই নির্বাচনে জয় নিশ্চিত। জোরকদমে প্রচার শুরু করব আমরা।
  • Link to this news (বর্তমান)