• প্রদীপ বানিয়ে হাল ধরেছেন মালদহ শহরের ৪০০ মহিলা
    বর্তমান | ২১ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, পুরাতন মালদহ: যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে। পুজোতে দেবী দুর্গা প্রতিমা বানিয়ে কার্যত প্রমাণ করে দিয়েছিলেন পুরাতন মালদহের নলডুবির পঞ্চাশ বছরের বিধবা বাসন্তী দাস। এবার শহরে আরও এক নজির সামনে এল। মাটির প্রদীপ তৈরি করে স্বনির্ভর হচ্ছেন পুরাতন মালদহ শহরের চারশোর বেশি মহিলা। তাঁদের মধ্যে সিংহভাগ মহিলার বাড়ি ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাচামারি, পালপাড়া, লেবুবাগান এলাকায়। কিছু পরিবার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে রামচন্দ্রপুর সহ বিভিন্ন শহরের পাড়াতে রয়েছে। মহিলারা কেউ বয়সে প্রবীণ, কেউ বা একেবারেই নবীন। কারও স্বামী মারা গিয়েছেন। তবুও এই পেশাকে আঁকড়ে ধরে তাঁরা এগিয়ে যাচ্ছেন। সংসার সামলে দিনের বাকি সময়টুকুকে কাজে লাগিয়ে নিজের হাতেই মাটির প্রদীপ তৈরি করছেন। 


    দীপাবলি উপলক্ষ্যে আলোর উৎসবকে মাথায় রেখে এখন জোরকদমে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সারাবছর ধরে বানানো অসংখ্য প্রদীপও যত্ন করে রেখে দেওয়া হয়েছে। সেগুলি   ইংলিশবাজারের বাজার এবং পুরাতন মালদহ শহরের বিভিন্ন জনবহুল দৈনিক মার্কেটের ব্যবসায়ীদের পাইকারি দরে বিক্রি করা শুরু হয়েছে। তা থেকে মহিলারা অর্থ উপার্জন করছেন। প্রদীপ বানিয়ে অর্থ উপার্জন করে স্বামী এবং পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে খুশি মহিলারা। এদিন কথা হচ্ছিল ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের লেবু বাগান এলাকার সপ্তমী পালের সঙ্গে। তিনি পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে প্রদীপ বানাচ্ছেন। বললেন, স্বামী টোটো চালান। বাড়িতে এক ছেলে এবং দুই মেয়ে। রান্না ও সংসার সামলে এই কাজ করি। দীপাবলি উপলক্ষ্যে সারাবছর প্রদীপ বানাই। অর্ডারও আসে। এক হাজার পিস ৪০০ টাকা করে নিই। একই ওয়ার্ডের আটচল্লিশ বছর বয়সী বিধবা শিখা পালের বাড়ি পালপাড়াতেই। আট মাস আগে স্বামী মারা গিয়েছেন। বাড়িতে এক ছেলে, ছেলের বউ সহ নাতি রয়েছে। ছেলের পাশে দাঁড়াতে তিনিও বছর চারেক ধরে প্রদীপ বানাচ্ছেন। তিনি বলছেন,আমরা পাড়ার মহিলারা কেউ বসে নেই। সবার বাড়িতেই এখন প্রদীপ বানানোর কাজ চলছে। দীপাবলির আগে তো প্রদীপের প্রচুর চাহিদাও থাকে। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার বিশ্বজিৎ হালদার এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার শক্রঘ্ন সিনহা বর্মা বলেন, আমাদের দুটি ওয়ার্ড মিলে ৪০০ বেশি মহিলারা প্রদীপ বানাচ্ছেন। মহিলারা নিজের পায়ে দাঁড়াচ্ছেন এটা খুব ভালো দিক।
  • Link to this news (বর্তমান)