সংবাদদাতা, পতিরাম: বেডে কাতরাচ্ছেন রোগী। বারবার ডাকলেও চিকিৎসক না আসায় অকালে প্রাণ হারালেন তরুণ। ফের একবার বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিলতির জেরে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠল। শনিবার রাতে এই ঘটনার পর হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান রোগীর পরিবার ও পরিজনেরা। তাঁদের দাবি, রোগীর অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হলেও চিকিৎসক দেখতে আসেননি। এমনকী বার বার নার্সকে বলা হলেও গ্রাহ্য করা হয়নি। পরে রোগীর মৃত্যুর পর চিকিৎসকরা এলে হইচই শুরু হয়ে যায় হাসপাতালে। বিক্ষোভের পর হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে বালুরঘাট থানার বিশাল পুলিস বাহিনী। তবে রবিবার হওয়ায় এদিন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করতে পারেনি রোগীর পরিবার। অভিযোগ পেলেই খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর।
মৃতের কাকা পিঙ্কু মহন্তের দাবি, শ্বাসকষ্ট হওয়ায় ভাইপোকে ভর্তি করা হলেও চিকিৎসা হয়নি। শুধু নার্সরা ইঞ্জেকশন দিয়েছিলেন। রোগী বিছানায় ছটফট করতে থাকলে নার্সদের বলি চিকিৎসককে ডাকুন। কিন্তু একজনও আসেননি দেখতে। ভাইপোর মৃত্যু হওয়ার পর এক চিকিৎসক এসেছিলেন। তাঁদের গাফিলতির জন্যই অকালে প্রাণ হারাল ভাইপো। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে সব জায়গায় লিখিত অভিযোগ করব।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, মৃত যুবকের নাম আদিত্য মহন্ত (২৬)। বাড়ি বালুরঘাট শহর লাগোয়া ত্রিনাথ মন্দির পাড়া এলাকায়। তিনি দিল্লিতে কাজ করতেন। কিছুদিন আগে বাড়ি ফেরার পর গত বৃহস্পতিবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেদিনই সন্ধ্যায় বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। রবিবার যুবকের দেহ ময়নাতদন্ত হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় মেডিক্যাল কলেজ নেই। বাসিন্দাদের ভরসা বলতে জেলা হাসপাতাল। কিন্তু সেখানে বারবার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ সামনে আসছে। মাস তিনেক আগে ৮ বছরের নাবালকের মৃত্যুতে জেলা হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছিল। সম্প্রতি বিজেপির এক নেত্রীর চিকিৎসায় গাফিলতির জেরে মৃত্যুরে অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাসপাতাল। বারবার একই অভিযোগ ওঠায় পুজোর আগে হাসপাতালে বৈঠক করেছিলেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস। তিনি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ভিতরেই একটি ওয়েটিং হল তৈরির নির্দেশ দেন। যার উদ্দেশ্য ছিল, কল এলেই যাতে চিকিৎসকরা দ্রুত রোগীর কাছে পৌঁছতে পারেন। তারপরেও গাফিলতির জেরে মৃত্যুর অভিযোগে অস্বস্তি বাড়ছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের।
এবিষয়ে হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ বলেন, গাফিলতি হওয়ার কথা নয়। কী কারণে মৃত্যু হয়েছে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত হবে। নিজস্ব চিত্র।