নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ১৩ অক্টোবর ছিল দশমী। তারপর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু শহরের একাধিক জায়গায় এখনও খোলা হয়নি প্যান্ডেল। মানুষের বক্তব্য, গলি কিংবা পার্কের ভিতরের দিকে হলে বিশেষ সমস্যা নেই। কিন্তু এ রবিবারও দেখা গিয়েছে শহরের একাধিক মূল রাস্তা ‘দখল’ করে রয়েছে দুর্গাপুজোর মণ্ডপ। এই পরিস্থিতিতেই আজ থেকে পুরোদমে খুলছে সরকারি ও বেসরকারি অফিস। ফলে আজ সকাল থেকে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। যত্রতত্র প্যান্ডেল থাকায় যানজটও তৈরি হবে। এই আশঙ্কা করছে লালবাজার। বিশেষত, বেহালার দিকে মণ্ডপ না খোলার ছবি বেশিমাত্রায় দেখা যাচ্ছে। জেমস লং সরণি, ডায়মন্ডহারবার রোডে খোলা হয়নি প্যান্ডেল। এর পাশাপাশি শহরের একাধিক এলাকায় এখনও খোলা হয়নি বিজ্ঞাপনী হোর্ডিংও। পুরসভার নির্ধারিত ‘ছাড়’এর মেয়াদ শেষ হলেও বাঁশের কাঠামো এখনও রয়ে গিয়েছে।
বেহালা ট্রাম ডিপো সংলগ্ন জেমস লং সরণির উপর দু’টি পুজো হয়। সেই রাস্তার প্রায় অর্ধেক আটকে তৈরি হয় দুর্গাপুজোর মণ্ডপ। তাদের মধ্যে শ্রীসঙ্ঘের পুজো মণ্ডপ শনিবার রাত থেকে খোলা শুরু হয়েছে। তবে রবিবার বিকেল পর্যন্ত তা সম্পূর্ণ হয়নি। উদ্যোক্তাদের দাবি, সোমবারের সকাল হওয়ার আগেই সেই কাজ শেষ হয়ে যাবে। রবিবারও ওই রাস্তায় মণ্ডপসজ্জার বাঁশ, বাটাম, কাঠ ইত্যাদি পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। শ্রীসঙ্ঘ থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে জেমস লং সরণির উপর আরও একটি বারোয়ারি পুজোর মণ্ডপ রয়েছে। সেটি এখনও একই অবস্থায় দাঁড়িয়ে। মোমিনপুর মোড়ের কাছে ডায়মন্ডহারবার রোডের উপরও একটি মণ্ডপ খোলা হয়নি। আজ অফিস, স্কুল-কলেজ খুলে যাওয়ার ফলে ডায়মন্ডহারবার রোডের উপরে যানবাহনের চাপ বাড়বে। পুলিসের আশঙ্কা, ওই এলাকায় মেট্রোর কাজও চলছে। তার মধ্যে রাস্তার একপাশ অবরুদ্ধ থাকলে অফিস টাইমে খিদিরপুরগামী ফ্ল্যাঙ্কে ব্যাপক যানজট হতে পারে।
অন্যদিকে, চলতি বছর কলকাতা পুরসভা নোটিস জারি করে জানায়, পুজোর ১০ দিনের মধ্যে বিজ্ঞাপন খুলতে হবে। সেইমতো শহরে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিংগুলি রাস্তার পাশ থেকে খুলতে দেখা গিয়েছে। শ্যামবাজার, খান্না, হাতিবাগান, মানিকতলা, কাঁকুড়গাছি, উল্টোডাঙা, শিয়ালদহ, বেলেঘাটা, ইএম বাইপাস, মৌলালি থেকে এই ধরনের বিজ্ঞাপনগুলি সরানোও হয়েছে। কিন্তু রয়ে গিয়েছে বাঁশের কাঠামো। যদিও অনেক জায়গাতেই হোর্ডিংও রয়ে গিয়েছে। কালীঘাট, ভবানীপুর, টালিগঞ্জ, রানিকুঠির রাস্তায় এখনও চোখে পড়বে পুজোকেন্দ্রিক বিজ্ঞাপন। পাশাপাশি এখনও রাস্তাজুড়ে দাঁড়িয়ে বাঁশের তৈরি অস্থায়ী গেট। রাজা রামমোহন রায় সরণি, আমহার্স্ট স্ট্রিট ও এন্টালির সিআইটি রোড এলাকায় এমনই ছবি দেখা গিয়েছে। কলকাতা পুরসভার বিজ্ঞাপন বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো শেষ। তারপরও নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরলেও যে সমস্ত এজেন্সি বা বিজ্ঞাপনদাতা সংস্থা পুজোর বিজ্ঞাপন খোলেনি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।