• পুজোয় জমেছে বিপুল প্লাস্টিক বর্জ্য, উদ্বেগে পঞ্চায়েত থেকে পুর কর্তারা
    বর্তমান | ২১ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: শহর থেকে গ্রাম— পুজো মরশুমে হুগলি জেলায় জমেছে বিপুল প্লাস্টিক বর্জ্য। পুজোয় নতুন জামাকাপড় থেকে মিষ্টি, পুজোর নানা উপকরণের সঙ্গে এসেছে প্লাস্টিক। সে সব জমা হচ্ছে পুরসভা বা পঞ্চায়েতের ডাস্টবিনে। কখনও কখনও তা ছড়িয়ে পড়ছে রাস্তাঘাটে। হুগলি জেলায় প্লাস্টিক বর্জ্যকে নষ্ট করা বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার পর্যাপ্ত পরিকাঠামো তৈরি হয়নি। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় এই ব্যবস্থা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম। ফলে পুজো মরশুমের বিপুল প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ে বিপাকে পড়েছে জেলার বিভিন্ন পুরসভা থেকে পঞ্চায়েত। তবে পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের একাংশের দাবি, বাসিন্দাদের মধ্যে প্লাস্টিক বর্জ্য সাফাই কর্মীদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। ফলে এই বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা কমেছে। 

    হুগলি জেলা পরিষদের সভাধিপতি রঞ্জন ধাড়া বলেন, পুজো মরশুমে প্লাস্টিক বর্জ্য একটি বড় সমস্যা। তবে সার্বিকভাবে এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে সক্রিয় করার কাজ চলছে। প্লাস্টিক প্রক্রিয়াকরণ বা বিকল্প ব্যবহারের পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। হুগলির মগরা-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রঘুনাথ ভৌমিক কুন্তী নদীর দূষণ নিয়ে সামাজিক আন্দোলনে নেমেছিলেন। রঘুনাথবাবু বলেন, পুজো মরশুমে ব্যাপক প্লাস্টিক বর্জ্য জমেছে, এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই। সেগুলি প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা সেভাবে নেই। বিষয়টি উদ্বেগের। তবে এবার পুজোর পর বাসিন্দারা প্লাস্টিক বর্জ্য মজুত করে সাফাই কর্মীদের হাতে তুলে দিয়েছেন। এর ফলে প্লাস্টিক বর্জ্য ছড়িয়ে পড়া রোখা গিয়েছে। এই সচেতনতা মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে। যা ভালো ইঙ্গিত।

    চুঁচুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অমিত রায় বলেন, বিপুল প্লাস্টিক বর্জ্য জমা হয়েছে। সঙ্গে থার্মোকলের থালা, বাটি, গ্লাস শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। রাস্তাঘাটেও ছড়িয়ে রয়েছে। এই বিপুল বর্জ্য সামাল দেওয়া মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডানকুনির বাসিন্দা সমাজতত্ত্বের অধ্যাপক প্রিয়ঙ্কর দাস বলেন, নাগরিক সচেতনতার পাশাপাশি পর্যাপ্ত প্রশাসনিক উদ্যোগও প্রয়োজন। না হলে প্লাস্টিক বর্জ্য সামাল দেওয়া কঠিন। প্লাস্টিকমুক্ত সমাজ গড়তে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা প্রয়োজন। সাধারণভাবেই প্রাত্যহিক জীবনে প্লাস্টিকজাত জিনিসের বিপুল ব্যবহার। পুজো এলে তার বাড়বাড়ন্ত হয়। নতুন জামাকাপড় কেনার ধুম পড়ে। উপহার আদানপ্রদান হয়। ফলে, জমতে থাকে প্লাস্টিক বর্জ্য। অথচ হুগলি জেলায় এখনও ওই বিশেষ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি হয়নি। ফলে গ্রাম থেকে শহর, সর্বত্র জমেছে প্লাস্টিকের পাহাড়।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)