• বছরভর ‘সজাগ’ থেকেই ভরা মরশুমে ডেঙ্গি-রোধ
    এই সময় | ২১ অক্টোবর ২০২৪
  • গত বছর, অর্থাৎ ২০২৩-এর ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৮ হাজার ৮৯৯ জন। একই সময়ে এ বার মহানগরে মাত্র ৬৫২ জনের ডেঙ্গির রিপোর্ট পজ়িটিভি এসেছে। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এ বার আক্রান্তের সংখ্যা ৯৩ শতাংশ কম। পাশাপাশি, মশাবাহিত রোগের ভরা মরশুমেও শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ডেঙ্গিমুক্ত ৩০টি ওয়ার্ড।২০১৭ সালে শহরে ২৯টি ওয়ার্ড ডেঙ্গিশূন্য ছিল। এ বারের পরিস্থিতি তাই অনেকটাই স্বস্তি দিচ্ছে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তাদের। এই ৩০টি ওয়ার্ডে ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গি-সংক্রমণ ঠেকানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ পুরসভার কাছে। এক কর্তা বলেন, ‘সচেতনতা বৃদ্ধি ও নজরদারির কারণেই ওয়ার্ডগুলিকে এখনও ডেঙ্গিমুক্ত রাখা গিয়েছে।’

    রাজ্যের সব জেলাকে পিছনে ফেলে ডেঙ্গি-আক্রান্তের নিরিখে ২০২৩-এ শীর্ষে ছিল কলকাতা। আক্রান্ত হয়েছিলেন মোট ১৩ হাজারের বেশি মানুষ। আগের পাঁচ বছরের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছিল ২০২৩ সাল। সে কথা মাথায় রেখে এ বছরের শুরুতেই ’২৩-এর হটস্পটগুলিকে চিহ্নিত করেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা। তৈরি হয় বরোভিত্তিক বিশেষ টিম। বন্ধ বাড়ি, ফাঁকা জমিতে শুরু থেকেই নজর রেখেছে এই দল।

    ‘ডেঙ্গির আঁতুড়’ হিসেবে পরিচিত বিভিন্ন আবাসনেও নজরদারির জন্য এ বার ময়দানে নামানো হয় মহিলা কর্মীদের। তাঁদের সক্রিয়তায় আবাসনে জল জমা ঠেকানো গিয়েছে বলে পুরসভার বক্তব্য। একই সঙ্গে লাগাতার প্রচারের কারণে বড় অংশের মানুষের মধ্যে সচেতনতা ফিরেছে বলে দাবি পুরকর্তাদের। তা ছাড়া, এ বারের আবহাওয়া মশাবাহিত রোগের জন্য তেমন অনুকূল ছিল না বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এ বার ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে বেশ ক’দিন। যার ফলে মশার লার্ভা ধুয়ে গিয়েছে।

    গত বছর ডিসেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে শহরে ডেঙ্গির রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছিল ২৮ জনের। বৃষ্টি কমার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণত ডেঙ্গির প্রকোপ কমতে থাকে। কিন্তু এ বছর এখনও বৃষ্টি চলছে। তা ছাড়া, বাসিন্দাদের বড় অংশ মনে করেন যে, শীত পড়লে ডেঙ্গির দাপট কমে যায়। সে কারণে জল জমিয়ে রাখার অভ্যেসে ফিরে যান অনেকে। এই বিষয়গুলি মাথায় রেখে ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গি-দমনে যাবতীয় কর্মসূচি চলবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা।

    পুরসভার মুখ্য পতঙ্গিবদ দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, ‘এটা ঠিক যে তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির নীচে নামলে মশার বংশবৃদ্ধি অনেকটা কমে যায়। তবে কলকাতার যা পরিস্থিতি, তাতে বছরভর ডেঙ্গি হচ্ছে। কারণ, কলকাতার বাতাসে আর্দ্রতা ক্রমশ বাড়ছে।’ কলকাতা পুরসভা গত বছরই নতুন স্লোগান তৈরি করেছে — ‘জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর, সজাগ থাকুন বছরভর।’
  • Link to this news (এই সময়)