• ধৃত রাহুলের বান্ধবীর কথায় বাড়ল রহস্য
    এই সময় | ২১ অক্টোবর ২০২৪
  • এই সময়, কৃষ্ণনগর: দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীর মৃত্যুতে আরও রহস্য বাড়ালেন অভিযুক্ত রাহুল বসুর অন্য বান্ধবী। কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা দ্বিতীয় এই তরুণীর দাবি, মাত্র এক দিনের আলাপ। দুর্গাপুজোর কার্নিভালের দিন (১৪ অক্টোবর) কৃষ্ণনগরের কদমতলা ঘাটে আলাপ হয়েছিল তাঁদের। সেখানে রাহুলের সঙ্গে ছিলেন তার বান্ধবী। কিছুক্ষণ কথাবার্তার পরে ফোন নম্বর দেওয়া নেওয়া হয় তাঁদের মধ্যে। ঘটনার দিন মৃতার হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাসে আত্মহত্যার কথা লেখা পোস্ট দেখে তিনি তিন চারবার ফোন করলেও তরুণী ফোন ধরেননি বলে তাঁর দাবি। পরে তিনি রাহুলকেও ফোন করেন।তাঁর কথায়, 'রাহুল বলেছিল, ও আগেও এরকম করেছে, এগুলোকে গুরুত্ব না দিতে।' পুলিশ এই তরুণীকেও জেরা করেছে। ঘটনার দিন তাঁকে নিয়েই রাহুল রানাঘাটে সিনেমা দেখতে গিয়েছিল, নাকি অন্য তরুণীর সঙ্গে, তদন্ত করছে পুলিশ। রবিবার রাহুলের মা বলেন, 'মঙ্গলবার ছেলে রানাঘাটে সিনেমা দেখতে গিয়েছিল। তবে কোন বান্ধবীর সঙ্গে তা জানি না।'

    এ দিন ছাত্রীর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়েছে পুলিশ। সেখানে ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি। 'অ্যান্টিমর্টম বার্ন' অর্থাৎ জীবিত অবস্থায় পুড়ে মৃত্যুর তথ্য সামনে এসেছে। আগুনে মাথার চুল, দুটো হাত ও মুখের সিংহভাগ পুড়ে গিয়েছে। শরীরে কোনও ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন নেই। শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। শ্বাসনালীতে কার্বনের অস্তিত্ব মিলেছে। কৃষ্ণনগরের জেলা পুলিশ সুপার অমরনাথ কে বলেন, 'রিপোর্টে বার্ন ইনজুরিতেই মৃত্যু বলে উল্লেখ আছে। ফরেন্সিক টিমের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ আরও স্পষ্ট হবে।'

    ঘটনার দিন এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। ওই ফুটেজে রাত পৌনে এগারোটার সময়ে ঘটনাস্থলের দিকে তরুণীকে একা হেঁটে যেতে দেখা গিয়েছে বলে দাবি করেছেন পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, 'এরপর কারও সঙ্গে তরুণীর দেখা হয়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাহুল যে বান্ধবীর সঙ্গে রানাঘাটে সিনেমা দেখতে গিয়েছিল সেই তরুণীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।'

    রবিবার দুপুরে রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্য দেবযানী চক্রবর্তী মৃত ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবা-মা-সহ পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। কিছুটা দূরে ছাত্রীর দাদুর বাড়িতে গিয়েও কথা বলেন তিনি। ঘটনার দিন সন্ধ্যার আগে তরুণী লক্ষ্মীপুজোর জিনিস কিনতে যাচ্ছি বলে মাকে জানালেও বের হয়েছিলেন দাদুর বাড়ি থেকে। রবিবার ছিল মৃত ছাত্রীর পারলৌকিক কাজ। তরুণীর ছবিতে দেওয়া হয় তার পছন্দের ফুল। এমনকী মিষ্টি, চিপসের প্যাকেট ইত্যাদি যেগুলো তার পছন্দ ছিল, সেগুলোও সাজিয়ে দেওয়া হয়েছিল ছবির সামনে।
  • Link to this news (এই সময়)