• জঙ্গলে হাত-নাক ভাঙা মূর্তি! গায়ে কাঁটা দেওয়া পেটকাটি মা, মন্দিরে পা রাখলেই...
    ২৪ ঘন্টা | ২১ অক্টোবর ২০২৪
  • প্রদ্যুত্‍ দাস: ডুয়ার্স ঘুরতে এলে গরুমারা কিংবা রামসাই জঙ্গল ঘুরেই চলে যাবেন না কিন্তু,  রহস্যের চাদরে মোড়া এই তীর্থস্থানে না গেলে হবে বড় মিস! বড্ড জাগ্রত,  অদ্ভুত, গায়ে কাঁটা দেওয়া এই তীর্থ স্থানটি জুড়ে রয়েছে নানা অজানা ইতিহাস। জঙ্গল লাগোয়া বলে তীর্থস্থানটির পরিবেশ আরওই যেন রহস্যময়! জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি রোডের কিছুটা দুরে জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের অন্তর্গত দোমহনী কাঠালবাড়ি (ব্যাংকান্দি) গ্রামের কলাখাওয়া নদীর তীরে অবস্থিত মন্দিরে কষ্টিপাথরের মূর্তিটি পরিচিত “পেটকাটি মাতা”নামে।

    কেন এই দেবীর নাম পেটকাটি? কথিত আছে মাটি খুঁড়তে গিয়ে কোদাল লেগে নাকি পেট কেটে গিয়েছিল । আর তা থেকেই নাম পেটকাটি । আজও কালো কষ্টি পাথরের এই প্রাচীন পেটকাটি মূর্তির ছবি দেখলে শিহরণ জাগে । এই দেবী মূর্তি কালী হিসেবে পূজিত হলেও, সংশয় যে এই মূর্তি চণ্ডী না তন্ত্রদেবীর কোনও মূর্তি কি না । মূর্তিটির উচ্চতা প্রায় সাড়ে চার ফুট। দশভুজা, তবে ৩টি হাত ভাঙা । একটি পদ্মের উপর আসীন দেবী । বাম দিকের পাঁচটি হাতে রয়েছে হাতি, ঘণ্টা, ছিন্ন নরমুণ্ড, নরমূর্তি ও একহাত ভাঙা । ডানদিকের পাঁচটি হাতে রয়েছে হাতির মুখের অংশ, মানুষের কঙ্কাল, বাদ্য ঘণ্টা, অপর দুটি হাত ভাঙা । 

    নাক ভাঙ্গা মূর্তিটির উদরে একটি বড় গহ্বর হয়েছে এবং সেখানে একটি কাঁকড়া বিছে বা কেন্নো লম্বভাবে দণ্ডায়মান রয়েছে। মূর্তিটির মাথার উপরের দুই দিকে রয়েছে হাতির লম্বা শুঁড়। গলায় শোভা পাচ্ছে নরমুন্ডমালা। দেবী সর্পালঙ্কারে ভূষিতা। মাথায় রয়েছে সাপের মুকুট। কানের অলংকারটিও সাপের। কঙ্কালসার শরীরে জড়ানো আছে সাপের মালা। দেবীর দুটি চোখ বিস্ফোরিত হলেও কপালে ত্রিনয়ন রয়েছে । দেবীর পায়ের নিচে নারী মূর্তি, একদিকে শেয়াল, অপরদিকে পেঁচা রয়েছে । 

    পেটকাটি মা আদপে কালী মূর্তি হলেও একে ধূমাবতী চণ্ডী কালী দেবী হিসেবেই  দীপান্বিতা অমাবস্যায় পুজো হয় এখানে। মা'এর দর্শন করতে সারা বছরই পর্যটকদের ভীড় থাকে।  আর এই পুজোর সময় ভিন রাজ্য থেকেও ভক্ত সমাগম হয় ব্যাপক। তবে, কেন মায়ের এই অদ্ভুত রূপ কিংবা কত বছর ধরে এই পুজো হয়ে আসছে কি বিষয়ে স্থানীয়দের মধ্যেও রয়েছে নানা মতান্তর। আসলে রহস্যের বেড়াজালে এখনও অজানা পেটকাটি মায়ের ইতিহাস।

     

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)