আরজি কর কাণ্ড নিয়ে এখনও তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। সেই মুহূর্তে রাজ্যে হু হু করে বাড়ছে ডেঙ্গি। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত গোটা রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজারের গণ্ডি পার করেছে। যদিও গতবারের মতো এবার ভয়াবহ আকার ধারণ করেনি ডেঙ্গি। তবে এবার বর্ষা দেরিতে এসেছে, বিদায়ও নিয়েছে দেরিতে এই অবস্থায় আরও কয়েক সপ্তাহ ডেঙ্গি বাড়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এবার ডেঙ্গিতে শীর্ষে রয়েছে মুর্শিদাবাদ।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মূলত প্রতিবছর রাজ্যে ডেঙ্গির যে ট্রেন্ড থেকে সেই অনুযায়ী সিংহভাগ ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীই হয়ে থাকেন কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলি থেকে। কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী পাঁচ জেলা প্রতি বছর ডেঙ্গি আক্রান্তের নিরিখে প্রথম পাঁচের মধ্যে থাকে। তবে এবার সেই জেলাগুলিকে ছাপিয়ে গিয়েছে মুর্শিদাবাদ। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যে বর্তমানে যে সংখ্যক রোগী ডেঙ্গি আক্রান্ত তার মধ্যে চার ভাগের একভাগ রোগী হলেন মুর্শিদাবাদের, অর্থাৎ শুধু এই জেলাতেই সাড়ে তিন হাজারের কাছাকাছি মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও, ডেঙ্গি আক্রান্তের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মালদা এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাঁকুড়া। অন্য দুটি হল কলকাতা ও হুগলি জেলা। অর্থাৎ এবারের ট্রেন্ড বলছে কলকাতা থেকে দূরবর্তী জেলাগুলিতে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। এছাড়া এবার গ্রামীণ এলাকাতেও প্রচুরভাবে ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে।
আরও যে জেলাগুলিতে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেশি সেগুলি হল- উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পূর্ব বর্ধমান। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, দ্রুত নগরায়নের জন্যই দূরবর্তী জেলাগুলিতে ডেঙ্গি হু হু করে বাড়ছে। এমনটাই মনে করছে স্বাস্থ্যভবন। তবে এবার আক্রান্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা গত বছরের থেকে অনেকটাই কম। তাছাড়া জটিল ধরনের ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যাও গতবারের থেকে কম।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গি ধীরে ধীরে ধরন বদলাচ্ছে। আগে শীত পড়লে ডেঙ্গি হতো না। কিন্তু, চিরাচরিত সেই ধ্যান ধারণা ভেঙে যাচ্ছে। গত বছর পাহাড়ি এলাকাতেও ডেঙ্গির সংক্রমণ দেখা গিয়েছে। এবছরও দার্জিলিং এবং কালিম্পং-এর বিভিন্ন এলাকায় বহু মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন।