নবান্নে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জুনিয়র ডাক্তাররা। মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দিয়েছিলেন যে অনশন তোলার পরে যেন বৈঠকে আসেন তাঁরা। যদিও সেটা করা হয়নি। তারইমধ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ জন প্রতিনিধিকে আসতে বলা হয়েছিল। তবে ১৭ জন জুনিয়র ডাক্তার এসেছেন। তাঁদের সবাইকেই বৈঠকে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে। কিছুটা চমক দিয়েই আজ নবান্নের বৈঠকের লাইভস্ট্রিমিং হচ্ছে। আগের কয়েক দফার বৈঠকে লাইভস্ট্রিমিং নিয়ে তুমুল সংঘাত হয়েছিল। আজকের বৈঠকে ‘মেঘ না চাইতেই জল’-র মতো লাইভস্ট্রিমিং করা হচ্ছে।
বৈঠকের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আশা করছি যে আমার ভাইবোনেরা শারীরিকভাবে ভালো আছে। এবার যে সময় মেনে এসেছো, সেটা ভালো ব্যাপার। আশা করছি যে আপনারা ডিমান্ড বাড়াবেন না। প্রতিদিন ডিমান্ড বাড়ালে আমাদের অসুবিধা হয়। নবান্নের বৈঠক থেকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ এবং থ্রেট কালচারে অভিযুক্ত আশিস পান্ডের নাম নেন দেবাশিস হালদার। তাতে আপত্তি জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, যাঁরা এখানে নেই, তাঁদের নাম নেওয়া উচিত নয়। যে বিষয়টা বলতে চান, সেটা যেন বলেন ডাক্তাররা। তাতে দেবাশিস পালটা বলেন যে তাঁদের কয়েকজনের নামে অভিযোগ আছে। সেক্ষেত্রে কী করবেন? মুখ্যমন্ত্রী পাল্টা বলেন, অভিযোগ তো অনেকের বিরুদ্ধেই আছে।
কিঞ্জল নন্দ বলেন, ‘গত ১৪ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় যাঁরা অভিযুক্ত ছিলেন, তাঁদেরকেও ছেড়ে দেওয়া হল। এই বিষয়ে আপনার মতামত জানতে চাইছি।’ পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে এটা কি নতুন দাবি নাকি? তখন ডাক্তাররা জানান যে এটা স্রেফ বলছেন। অনিকেত মাহাতো দাবি করেন যে এমন একটা কমিটি থাকা দরকার, যে কমিটি নিরপেক্ষ হবে। আর কারও অভিযোগ থাকলে তাঁরা সেখানে গিয়ে নিদেনপক্ষে অভিযোগ জানাতে পারবেন।
অনিকেত মাহাতো মেডিক্যাল কলেজে যৌন হেনস্থার অভিযোগের কথা জানান। বলেন, ‘‘আরজি করের মতো দ্বিতীয় ঘটনা যাতে না হয়, তা দেখা হোক। মেয়েদের নিরাপত্তার জায়গাটা দেখা হোক।’’ তাঁর দাবি, ‘থ্রেট কালচার’-এর পাশাপাশি যৌন হেনস্থাও চলে। আন্দোলনকারী বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসচিবের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ রয়েছে। আপনি প্রমাণ চেয়েছেন। স্যরের হাত দিয়ে বেশ কিছু চিঠি বেরিয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একটা মানুষ অভিযুক্ত কি না, প্রমাণ না পেলে তাঁকে অভিযুক্ত করা যায় না।’’
নবান্নের বৈঠকে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে অপসারণের দাবি তুললেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সেইসময় অভিযুক্ত আর দোষীর মধ্যে পার্থক্য বোঝালেন এক যুবতী। আন্দোলনকারী ওই চিকিৎসক বলেন, ‘‘দোষ প্রমাণের আগে তাঁকে দোষী বলা যাবে না। তবে অভিযুক্ত বলা যেতে পারে।’’ মুখ্যমন্ত্রী এই দাবি মানেননি। স্বাস্থ্যসচিবকে অভিযুক্ত বলা যাবে না, জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সাফ কথা, নারায়ণস্বরূপ নিগমের অপসারণ বাদে বাকি কথা শুনবেন তিনি।