এই সময়, বাগনান: মাছ ধরতে গিয়েছিলেন দুই মৎস্যজীবী। তাঁদের চোখে পড়ে একটি শেয়াল নদী পাড়ে ঘোরাঘুরি করছে। কিন্তু তার মুখে প্লাস্টিকের একটি জার আটকে আছে। খবর পেয়ে পরিবেশ কর্মীরা বাগনানে পৌঁছেও খুঁজে পাননি ওই গোল্ডেন জ্যাকল বা শেয়ালটিকে। এর পর তার খোঁজে কেটে যায় সাত দিন। আট দিনের মাথায় ওই শেয়ালের মুখ থেকে জার খোলা হলো সোমবার। বাগনানের ছয়ানি গ্রামের ঘটনা।
দিন আটেক আগে বাগনান-শ্যামপুর সীমানাবর্তী এলাকা দেওয়ানতলার কাছে দামোদর নদে মাছ ধরছিলেন দুই মৎস্যজীবী আশিস দাশগুপ্ত ও তাপস দাস। দামোদরের পাড়ে মুখে জার আটকানো শেয়ালটিকে দেখতে পান তাঁরা। ঘটনাটি জানতে পারেন হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চের সদস্য চিত্রক প্রামাণিক। এর পরেই ছয়ানি গ্রামের পরিবেশ কর্মী পলাশ প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন চিত্রক।ওই এলাকার নদী ও জলাভূমির ধারে পলাশ খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। প্রায় সাতদিনের মাথায় ছয়ানি গ্রামের কাছে সেটির খোঁজ পান পলাশ। পলাশ বলেন, ‘শেয়ালটি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। জারবন্দি মুখ নিয়ে দেওয়ানতলা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ছয়ানি গ্রামে চলে এসেছিল।’
সোমবার সন্ধ্যায় পলাশ ঝুঁকি নিয়ে শেয়ালটিকে ধরে ফেলেন। একটি গ্যারেজের মধ্যে আটকে রাখা হয় তাকে। রাতেই চিত্রক, সুমন্ত দাস ও বন দপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন। শেয়ালের মুখ থেকে প্লাস্টিকের জার খোলা হয়। দুর্বল হয়ে পড়া শেয়ালটিকে জল ও খাবার দেওয়ার পর প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। চিত্রক বলেন, ‘আমরাই সাতদিন ধরে শেয়ালটিকে খুঁজছি। ওই জার হয়তো আরও আগে তার মুখে আটকে গিয়েছে। আর কিছুদিন এ ভাবে থাকলে শেয়ালটির মৃত্যু হতে পারত।’
বন দপ্তরের উলুবেড়িয়া রেঞ্জের অফিসার রাজেশ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে শেয়ালটির জীবন রক্ষা করতে পেরেছি। ওকে সুস্থ করে তোলার পর ওই এলাকায় মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।’