‘সনাতনীদের জন্য টক শো হোক একটু’! ‘দুর্গা প্রতিমার উপর হামলা’ নিয়ে শুভেন্দু উবাচ
হিন্দুস্তান টাইমস | ২২ অক্টোবর ২০২৪
তথাকথিত 'সেকুলারিজম' বা ধর্মীয় নিরপেক্ষতাকে শিখণ্ডী করে বারবার হিন্দুদের ভাবাবেগের উপর হামলার ঘটনাগুলি এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। সোমবার আরও একবার এই অভিযোগ তুলে সরব হলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন গ্রামীণ হাওড়ার রঘুদেবপুর এলাকায় আয়োজিত একটি কর্মসূচিতে যোগদান করেন তিনি। সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই ফের একবার সনাতন ধর্ম রক্ষার বার্তা দেন শুভেন্দু।
বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, আসলে ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্যই দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর, সনাতনীদের উপর হামলার মতো ঘটনাগুলি নিয়ে সেভাবে প্রচার করা হচ্ছে না। এমনকী, এর জন্য সংবাদমাধ্যমের একাংশকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও।
দুর্গা মূর্তি ভাঙার প্রসঙ্গ তুলে শুভেন্দু অভিযোগ করেন ও প্রশ্ন তোলেন, সেকুলারিজমের নামে, ভোট ব্যাঙ্কের নামে হিন্দুরা আজ আক্রান্ত হচ্ছে। কেন দুর্গা ঠাকুর ভাঙবে আপনি বলুন? কারও ধর্মে ও আস্থায় যদি কেউ আঘাত করে, তাহলে তো পুলিশ ব্যবস্থা নেবে?
শুভেন্দুর স্পষ্ট ইঙ্গিত, আসলে এ রাজ্যে অহিন্দুদের ভোট ব্যাঙ্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষমতায় টিকে থাকতে গেলে সেই ভোট ব্যাঙ্ক সঙ্গে রাখা দরকার। সেই কারণেই নানা জায়গায় হিন্দুরা আক্রান্ত হওয়ার পরও সেইসব ঘটনা সেভাবে প্রকাশ্য়ে আসছে না। পুলিশ যথাযথ পদক্ষেপ করছে না।
উল্লেখ্য, এবারের শারদোৎসব চলাকালীন হাওড়া-সহ একাধিক জায়গায় পুজো মণ্ডপে দুষ্কৃতী হামলার অভিযোগ ওঠে। কয়েকটি ক্ষেত্রে মূর্তি ভাঙারও অভিযোগ তোলা হয়। অন্যদিকে, ১২০ ফুটের দুর্গা মূর্তি নির্মাণের অনুমতি বাতিল করা নিয়েও কম জলঘোলা হয়নি। এদিন শুভেন্দু তাঁর বক্তব্যে সেই সমস্ত প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ফালাকাটা, গার্ডেনরিচ, শ্যামপুরে যেসমস্ত ঘটনা ঘটেছে, সেগুলি নিয়ে আলোচনা করা হোক। রানাঘাটে ১২০ ফুট দীর্ঘ দুর্গা প্রতিমা নির্মাণ করতে অনুমতি দেওয়া হয়নি। তা নিয়ে আলোচনা হোক। ইংরেজ বাজারে দুর্গাপুজোর গেট করতে দেওয়া হয়নি, সেই খবরও সংবাদমাধ্যমে দেখানো হোক।
বিরোধী দলনেতার আবেদন, টিভিতে একটা-আধটা টক শো অন্তত সনাতনীদের জন্য করা হোক।
এমনকী, এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের একাংশকে অভিযুক্ত করে শুভেন্দু অধিকারীর বার্তা, যারা দুর্গাপুজোর সময় ঘটে যাওয়া অনভিপ্রেত ঘটনাগুলি নিয়ে কোনও খবর করল না, তারাও আদতে সেকুলারিজমকে শিখণ্ডী করে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণই করছে।
এছাড়াও, এদিনের অনুষ্ঠানস্থলে ঘূর্ণিঝড় 'দানা' নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন শুভেন্দু। তাঁর আশঙ্কা, ওই ঝড় যদি সত্যিই বালাসোরে ল্যান্ডফল করে, তাহলে পশ্চিম মেদিনীপুরের সমূহ বিপদ। এমনকী, এর প্রভাব পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া ও দুই ২৪ পরগনা-সহ কলকাতাতেও পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন শুভেন্দু।
তিনি জানান, এই ঝড়ের মোকাবিলা করার জন্য বিজেপি সদস্যরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সংবাদমাধ্যম এই ঝড় নিয়েও যথাযথ খবর সম্প্রচার করছে না বলে অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু।