• পর্যটকদের আকর্ষণ দীঘার ঢেউসাগর পার্ক সাজছে নতুনভাবে
    বর্তমান | ২২ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কাঁথি: পর্যটকদের অন্যতম ডেস্টিনেশন দীঘার ঢেউসাগর পার্ক সাজছে নতুনভাবে। পর্যটক টানতে পার্কে বসছে ১৫ফুটের ডায়নোসর। রাবারের তৈরি এই ডায়নোসরটি বিদেশি প্রযুক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। জঙ্গলময় পরিবেশের মধ্যে অত্যাধুনিক আলো ও শব্দের কারিকুরির গুণে দেখে মনে হবে যেন অবিকল ডায়নোসর। যার গগনবিদারী আওয়াজে কেঁপে উঠবে চারদিক। বিরাট হাঁ-মুখ যেন সকলকে গিলতে ছুটে আসছে! যা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে বলেই মনে করছে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে উন্নত প্রযুক্তিযুক্ত জিপ বাইক, জিপ লাইন, ফ্লোটিং সাইকেল, জায়ান্ট সুইং সহ কয়েকটি নতুন আইটেম ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে। জায়ান্ট সুইং আইটেমের অঙ্গ হিসেবে সমুদ্রতীরে দু’টি প্রকাণ্ড কংক্রিটের হাত তৈরি হয়েছে। সেখানেই নতুন সেলফি জোন বসেছে। পার্ক পরিচালনার দ্বায়িত্বে থাকা এজেন্সির কর্তা প্রদীপ দাস ও ম্যানেজার শাশ্বতী বোসেল বলেন, পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে এবং তাঁদের আনন্দ-বিনোদন দিতে নতুন নতুন আইটেম যোগ করা হচ্ছে। বেড়াতে এলে এখানে একটা দিন সুন্দরভাবে কেটে যাবে। 

    উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৯ সালে দীঘা সফরে এসে পার্কটির ‘ঢেউসাগর’ নামকরণ করেছিলেন। পরের বছর ২৫ ডিসেম্বর পার্কটি চালু হয়। দীঘা সায়েন্সসিটির ঠিক পিছনেই ১২০ একর জায়গাজুড়ে পার্কটি রয়েছে। দীঘা¬-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থার তত্ত্বাবধানে সরকারি জায়গায় গড়ে ওঠা এই পার্কটি একটি এজেন্সি পরিচালনা করে। সমুদ্রতীরে ঝাউ সহ হরেকরকমের গাছগাছালি সমৃদ্ধ মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে পার্কটি পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। প্রতিদিনই পার্কে ১০থেকে ১৫হাজার পর্যটকের ভিড় জমে। সপ্তাহান্তে শনি ও রবিবার জমজমাট থাকে ঢেউসাগর। পার্কের প্রবেশপথে দু’দিকে প্রকাণ্ড আকারের ছ’টি জিরাফ পর্যটকদের স্বাগত জানায়। একটু এগিয়ে গেলেই রয়েছে ‘আই লাভ ঢেউসাগর’ ডেস্টিনেশন পয়েন্ট। রয়েছে কয়েকটি সেলফি জোন। যেখানে সেলফিপ্রেমীদের ভিড় লেগেই থাকে।  পার্কে বিভিন্ন জীবজন্তু ও কার্টুন চরিত্রের মডেল রয়েছে। পার্কে ২৫টিরও বেশি বিনোদনমূলক আইটেম রয়েছে। তার মধ্যে অধিকাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করা। আইটেমগুলির মধ্যে রয়েছে ইঞ্জিনচালিত টয়ট্রেন, শিশুদের জন্য টয়কার চালিত কার্টুন টয়ট্রেন। পার্কের মধ্যে জলাশয়ে রয়েছে প্যাডেল বোটিং, মিনি ক্রুজ।  রয়েছে কাশ্মিরী ঘরানার শিকারা। মিনি ক্রুজে কিছু সময়ের জন্য নাচ¬-গান-খানাপিনার মাধ্যমে বিনোদনের সুযোগ পাবেন পর্যটকরা। রয়েছে থ্রি-সিক্সটি ডিগ্রি সাইকেল-রাইড, ডবল সিটার সাইকেল-রাইড, রকেট ইজেক্টর, টয়কার, বুল-রাইড, মিকিমাউস, হিউম্যান¬-গাইরো প্রভৃতি নানা আকর্ষণীয় আইটেম। সবই শিশু এবং বড়দের জন্য। এছাড়াও রয়েছে ফিশ-স্পা এবং বিভিন্ন ধরনের পাখির প্রদর্শনী। রাজ্যের ২৪টি জেলার যে ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রয়েছে, যেমন দীঘার ঝিনুক, পুরুলিয়ার ছৌ¬-নৃত্য, দার্জিলিংয়ের চা¬ ও সবক’টি জেলার জন্য আলাদা আলাদা সুভেনিয়র বা স্মারক হল রয়েছে। সেখানে ওই সংস্কৃতির প্রদর্শনীর পাশাপাশি নানা সামগ্রী বিক্রিরও ব্যবস্থা রয়েছে। কমিউনিটি হলে নানা চিত্রের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের লক্ষ্ণীর ভাণ্ডার প্রকল্প সহ জেলার ঝিনুক, কাজু, মাদুর, শুঁটকি প্রভৃতি শিল্প তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া ফুডকোর্টে রয়েছে নানা স্বাদের খাবারের হাতছানি। এখানেই শেষ নয়। শনি ও রবিবার রাতে সমুদ্রতীরে সুদৃশ্য ময়ূরপঙ্খীর আদলে মঞ্চে সুশীতল হাওয়া গায়ে মেখে অনুষ্ঠান উপভোগের সুযোগও রয়েছে। সেখানে পরিবেশিত হয় বাউল, ছৌ-নৃত্য, রবীন্দ্রসঙ্গীতের পাশাপাশি নানা বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)