• কার সাফারিতে দেখা মিলছে গন্ডার-হাতির, খুশি পর্যটকরা
    বর্তমান | ২২ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, লাটাগুড়ি: সাফারিতে দেখা মিলল চিতাবাঘ! শনিবারের পর সোমবার। উচ্ছ্বসিত পর্যটকরা। বেশ কয়েকদিন ধরেই জঙ্গল সাফারিতে হাতি ও গন্ডারের দর্শন মিলছে গোরুমারায়। এছাড়া হরিণ, বাইসন তো আছেই। সোমবার একটি বিশালাকার পাইথনেরও দেখা পেয়েছেন পর্যটকরা। সবমিলিয়ে পর্যটকরা যার পরনাই খুশি। গোরুমারার ‘যাত্রাপ্রসাদ’ ওয়াচ টাওয়ারে উপচে পড়ছে পর্যটক। নেওড়া জঙ্গল ক্যাম্পেও ঢল নেমেছে পর্যটকদের। লাটাগুড়ির রেঞ্জার সঞ্জয় দত্ত জানিয়েছেন, জঙ্গল এবং ওয়াচ টাওয়ার মিলিয়ে গোরুমারায় প্রতিদিন প্রায় এক হাজার পর্যটক কার সাফারি করছেন। গোরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের সহকারী বনাধিকারিক রাজীব দে বলেন, গোরুমারায় চারটি হাতির পিঠে সাফারি চলছে। কিন্তু বুকিংয়ের এতটাই চাপ যে, তাতেও সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু জঙ্গলের পরিবেশের কথা মাথায় রেখে এবং বন্যপ্রাণীদের কথা ভেবে আমরা সাফারির হাতির সংখ্যা এখনই আর বাড়াতে চাইছি না।

    কলকাতার বেহালা থেকে গোরুমারায় বেড়াতে এসেছেন রেশমি ভট্ট। এদিন বিকেলে সাফারিতে যাত্রাপ্রসাদ টাওয়ারে যাওয়ার পথে হাতি, গন্ডারের পাশাপাশি চিতাবাঘের দেখা পেয়ে দারুণ উৎসাহিত। বললেন, একসঙ্গে এত বন্যপ্রাণীর দেখা পাব, কখনও ভাবতে পারিনি। মোবাইলে ছবিও তুলেছি। কার সাফারির চালক তপন রায় বলেন, গত শনিবারও যাত্রাপ্রসাদ ওয়াচ টাওয়ারে যাওয়ার পথে চিতাবাঘের দেখা পেয়েছেন পর্যটকরা। হাড়হিম করা অভিজ্ঞতা। বহু বছর ধরে গোরুমারায় সাফারির গাড়ি চালাচ্ছি। সাফারিতে সচরাচর চিতাবাঘ দেখা যায় না।

    কলকাতার যাদবপুর থেকে গোরুমারায় বেড়াতে এসেছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। বললেন, অনলাইনে কোনও টিকিট না পেয়ে এদিন অফলাইনে মেদলা ওয়াচ টাওয়ারে সাফারির টিকিট কাটি। প্রথমে জিপসি, তারপর মোষের গাড়িতে ওয়াচ টাওয়ার। গন্ডার দর্শন হয়েছে। আমরা দারুণ খুশি।

    উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত থেকে গোরুমারায় বেড়াতে এসেছেন শিল্পা ভট্টাচার্য। বললেন, আমাদের যাত্রাপ্রসাদ ওয়াচ টাওয়ারে সাফারি ছিল। যাওয়ার পথেই হাতি দর্শন হয়েছে। ওয়াচ টাওয়ারের কাছেই জলাশয়। সেখানে লবণ খেতে এসেছিল গন্ডারের দল। গন্ডারের স্নানও চাক্ষুষ করেছি। একেবারে পয়সা উশুল যাকে বলে।

    গাইডরা জানিয়েছেন, ইদানীং বেশ ভালোই বন্যপ্রাণী দেখা যাচ্ছে। গোরুমারায় মূলত তিন ধরনের হরিণ রয়েছে। দিনের যে কোনও সময়ের সাফারিতে পর্যটকরা চিতল হরিণের দেখা পাচ্ছেন। এছাড়া ময়ূর তো আছেই। বনদপ্তর সূত্রে খবর, যাত্রাপ্রসাদ ওয়াচ টাওয়ারে কার সাফারিতে প্রতি ট্রিপে ৩৬টি করে টিকিট দেওয়া হচ্ছে। চারটি করে ট্রিপ চলছে দিনে। সন্ধ্যার ট্রিপে বাড়তি পাওনা হিসেবে থাকছে হর্নবিল বনবাংলো চত্বরে আদিবাসীদের নৃত্যানুষ্ঠান। মেদলা ওয়াচ টাওয়ারে প্রতি ট্রিপে ৪২টি করে টিকিট দেওয়া হচ্ছে। এখানেও দিনে চারটি করে ট্রিপ চলছে। চাপড়ামারিতে প্রতি ট্রিপে দেওয়া হচ্ছে ২৪টি টিকিট। তবে চুকচুকি ওয়াচ টাওয়ারে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না কাউকে। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পর্যটকদের। একইভাবে চন্দ্রচূড় ওয়াচ টাওয়ারটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় হতাশ তাঁরা। বনদপ্তরের বক্তব্য, চুকচুকি ওয়াচ টাওয়ারের অবস্থা ভালো নয়। সেকারণে পর্যটকদের উপরে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। মূর্তি সেতুর কাজের জন্য বন্ধ চন্দ্রচূড় ওয়াচ টাওয়ার।
  • Link to this news (বর্তমান)