• বাম আমলে পুলিসি হেফাজতে স্বামীকে পিটিয়ে খুন! ‘জাস্টিস’ নিয়ে এই সিপিএমই সেদিন চুপ ছিল কেন?
    বর্তমান | ২২ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এলাকায় সিপিএমের দাদাগিরির বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে গিয়ে একাধিকবার আক্রান্ত হন ট্যাংরার প্রতিবাদী যুবক বাপি কর্মকার। পরে এলাকায় গণ্ডগোলের অজুহাতে ২০০১ সালে সিপিএমের ইন্ধনে তাঁকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। আর তারপরই তরতাজা ওই যুবককে পুলিসি হেফাজতে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। ২৩ বছর আগে, বাম আমলের ওই ঘটনার ‘জাস্টিস’ না-মেলায় ক্ষোভে ফেটে পড়লেন নিহত যুবকের স্ত্রী লক্ষ্মী কর্মকার। ট্যাংরার ডি সি দে রোডের বাসিন্দা ওই গৃহবধূ সোমবার একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন,‘অন্যদের মতো অভয়ার বিচার আমিও চাই। কিন্তু আমার স্বামীকে যারা পিটিয়ে মারল, তাদের বিচার কবে হবে? কেন সেদিন আমার স্বামীর খুনের জাস্টিস পেতে সিপিএম নানাভাবে পুলিসের সঙ্গে গাঁটছাড়া বেঁধেছিল?’ 

    ওই শোকসন্তপ্ত মহিলা আরও বলেন, ‘অভয়ার বিচারের জন্য গলা ফাটাচ্ছে সিপিএম, অথচ আমার স্বামীর বিষয়ে আজও চুপ করে আছে! বলতে পারেন, এটা কী ধরনের দ্বিচারিতা?’

    আদালত সূত্রের খবর, ২০০১ সালে ঘটনার পর মৃত যুবক বাপি কর্মকারের স্ত্রী লক্ষী দেবীর অভিযোগ নিতে গিয়ে তাঁকে বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল। তৎকালীন বাম সরকারের প্রশাসনের নানা দপ্তর এবং কোর্টের দরজায় তাঁকে হত্যে দিতে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অভিযুক্ত দুই পুলিস কর্মীর বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রজু করেই দায় সারে পুলিস। শিয়ালদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে ওই মামলার বিচার আজও শুরু হয়নি। এমনকী, কয়েক বছর আগে গুরুত্বপূর্ণ মামলার কেস‑ডায়েরিও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিষয়টি নিয়ে প্রবল শোরগোল সৃষ্টি হওয়ায় সেই নথিরই খোঁজ মেলে রাতারাতি। আইনের বিধান অনুসারে, অভিযুক্তের কোনও আত্মীয় সরকারি আইনজীবী হলে তিনি তাঁর হয়ে সেই মামলায় সরকারি আইনজীবী হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন না। কিন্তু এক্ষেত্রে সেই নিয়ম-নীতি জলাঞ্জলি দেওয়া হয়েছিল। এক অভিযুক্ত পুলিস কর্মীর আত্মীয় একসময় এই মামলার সরকারি আইনজীবী ছিলেন। শেষ পর্যন্ত মৃতের স্ত্রী বিষয়টি নিয়ে সরকারি মহলে দরবার করেন। তার ভিত্তিতে সরকারি আইনজীবী পাল্টানো হয়। 

    এদিন ওই মহিলা বলেন, ‘আমার একটাই দাবি, আমার স্বামীর খুনের মামলার বিচার দ্রুত শুরু হোক।’ 

    অন্যদিকে, মুখ্য সরকারি কৌঁসুলি শিবনাথ অধিকারীর বক্তব্য, পুজোর ছুটি মিটলেই মামলাটির বিষয়ে তিনি বিস্তারিত খোঁজ নেবেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন।
  • Link to this news (বর্তমান)