• সংসদের নির্দেশ সত্ত্বেও অধিকাংশ স্কুলেই শুরু হল না অনলাইন ক্লাস
    বর্তমান | ২২ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: উচ্চশিক্ষা সংসদের নির্দেশিকা সত্ত্বেও কলকাতা তথা গোটা রাজ্যে অনলাইন ক্লাস করানোর ক্ষেত্রে বেশিরভাগ স্কুলই উদ্যোগ নিল না। সোমবার থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় সেমেস্টারের ছাত্রছাত্রীদের জন্য এই বিশেষ ক্লাসের নির্দেশ দিয়েছিল সংসদ। তবে, তা খুব একটা ফলপ্রসূ হয়নি বলেই বিভিন্ন সূত্রে খবর। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু স্কুল বা শিক্ষক ক্লাস করালেও সোমবার ছুটির মেজাজেই কাটল অধিকাংশ স্কুল। এই তালিকায় রয়েছে শহরের নামী, সরকারি স্কুলগুলিও। ছুটির পরে বিভিন্ন কারণে আর সেভাবে নিয়মিত ক্লাসের সুযোগ মিলবে না। তা সত্ত্বেও অনলাইন ক্লাস উদ্যোগ নিয়ে করাতে পারল না স্কুলগুলি।

    কেন এই উদ্যোগ সফল হল না? মূলত তিনটি কারণ তুলে ধরছেন শিক্ষকরা। প্রথমত, বহু স্কুলে পর্যাপ্ত শিক্ষক এবং পরিকাঠামোর অভাব। দ্বিতীয়ত, এই সময়ে ছাত্রছাত্রীরা উৎসব কাটিয়ে পড়াশোনায় ফিরছে। তাই তারা বেশি জোর দিচ্ছে প্রাইভেট টিউশনে। ফলে, স্কুলের ক্লাস তাদের কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে না। তৃতীয়ত, বহু শিক্ষক-শিক্ষিকাই লম্বা ছুটিতে বাইরে বেড়াতে গিয়েছেন। সবাইকে পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কলকাতার একটি নামী সরকারি স্কুলের শিক্ষক জানান, দশম পর্যন্ত অনলাইন মোডে কিছু বিষয়ের ক্লাস চলছে। তবে, একাদশে কোনও পড়ুয়া পাওয়া যায়নি। তারা প্রাইভেট টিউশন ছেড়ে স্কুলের ক্লাসে যোগ দিতে পারছে না। দুপুর পর্যন্ত ক্লাস হওয়ার কথা থাকলেও তারা রাজি হয়নি।

    যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, আমাদের সিলেবাস শেষ করার জন্য নিয়মিত ক্লাস হয়েছে। তাই ভেবেছিলাম, উৎসবের ছুটিতে আর অনলাইন ক্লাস করব না। তবে, সংসদ সভাপতি নির্দেশ দেওয়ার পরে সেটা অমান্য করতে চাইনি। শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সোমবার থেকেই সেই ক্লাস শুরু হয়েছে। ছাত্রছাত্রীরাও তাতে অংশ নিয়েছে। 

    তবে প্রধান শিক্ষক সংগঠন অ্যাডভান্সড সোসাইটি অব হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর শীর্ষনেতা চন্দন মাইতি এই উদ্যোগ অসফল হওয়ার পিছনে কয়েকটি যুক্তি দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ খাতায়কলমে ১০ দিনের গরমের ছুটি ঘোষণা করেছে। এদিকে, পুজোর ছুটি দিয়েছে ভাইফোঁটা পর্যন্ত। এই লম্বা ছুটিতে অনেকেই আগেভাবে টিকিয কেটে রাখেন বেড়াতে যাওয়ার জন্য। এদিকে, গরমের ছুটি আদতে দু’মাসে গিয়ে ঠেকে। তা নির্ধারিত ছুটির বাইরে। তবে, সেটা নিশ্চিত না-হওয়ায় কেউ সেই সময়ে বেড়াতে যান না। তাই আমরা দাবি করেছিলাম, গরমের ছুটি বাড়িয়ে পুজোর ছুটি কমানো হোক। না-হলে এই সমস্যা থাকবেই। তাছাড়া, শিক্ষকের অপ্রতুলতা, পরিকাঠামোর অভাবও একটা কারণ। তবে, এর ফলে আখেরে সিলেবাস শেষ করা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)