• বাঁশবেড়িয়ায় কার্তিক পুজো ঘিরে উচ্ছ্বাস, তুঙ্গে প্রশাসনিক তৎপরতা
    বর্তমান | ২২ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: দুর্গাপুজো মিটতে না মিটতেই বাঁশবেড়িয়ার শুরু হয়ে গেল কার্তিক পুজোর প্রস্তুতি। পুজো উদ্যোক্তারা ময়দানে নেমে পড়েছেন। উৎসব নির্বিঘ্নে করতে তৎপর প্রশাসনও। এখানকার কোনও পুজো পার করেছে ৫০ বছর তো কোনওটির বয়স ৭৫ বছর। কেউ আবার শতাব্দী প্রাচীন। সব পুজো উদ্যোক্তা প্রভাত ফেরি সহ নানা রকমের অনুষ্ঠান শুরু করেছে। জমে উঠেছে প্রাক পুজোর আসর। বাঁশবেড়িয়ায় কার্তিক পুজো ঐতিহ্যবাহী। খুব জনপ্রিয় তার ভাসানযাত্রা। বাঁশবেড়িয়ার কেন্দ্রীয় কার্তিক পুজো কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার কমিটিতে নথিভুক্ত ৬৩টি পুজোর আয়োজন হয়েছে। তার মধ্যে ৪২টি কমিটি শোভাযাত্রায় অংশ নেবে। কার্তিক পুজো শুরু ১৬ নভেম্বর। শোভাযাত্রা হবে ১৯ নভেম্বর। দশমী থেকে বাঁশবেড়িয়ার কার্তিক পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে। শুরু হয় কাঠামো পুজো। তাৎপর্যপূর্ণ এই যে, নামে কার্তিক হলেও কালী থেকে শিব, নারায়ণ থেকে ভারতমাতার পুজোও হয় বাঁশবেড়িয়ায়। শোভাযাত্রাতে সেই আয়োজকদের অনেকেই থাকেন। ফলে কার্তিক পুজোর মরশুমে পৌরাণিক থেকে লৌকিক দেবদেবীদের আরাধনার অভূতপূর্ব আসর বাঁশবেড়িয়ায় বসে। ইতিমধ্যেই পুজো পর্ব সুষ্ঠুভাবে পার করতে বৈঠক করেছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পুজো কমিটির সঙ্গে পুলিস ও প্রশাসনের বৈঠকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বিপুল জনজোয়ার নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে। বাঁশবেড়িয়ার কার্তিক পুজো কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মকর্তা ও বাঁশবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান আদিত্য নিয়োগী বলেন, ‘পুজোর আয়োজন নিয়ে একদফা বৈঠক হয়েছে। বিপুল দর্শক সমাগমের বিষয়টি মাথায় রেখে নিরাপত্তার যাবতীয় আয়োজন হবে। বাঁশবেড়িয়াতে জলপথে প্রচুর মানুষ পুজো দেখতে আসেন। সেই কারণে নদীপথে যোগাযোগের সুযোগ বাড়ানো হবে। সঙ্গে নিরাপত্তার জন্য জলপথেও পুলিসের নজরদারি থাকবে। পুরসভার পক্ষ থেকেও প্রয়োজনীয় সাহায্য করা হবে।’ বাঁশবেড়িয়া সপ্তগ্রাম বিধানসভার অন্তর্গত। প্রতিবছর পুজোর আয়োজনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন প্রাক্তন মন্ত্রী ও বর্তমান বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘সাবেক বংশবাটি তথা বর্তমান বাঁশবেড়িয়াতে কার্তিক পুজো একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব। তাতে মানুষের আবেগ জড়িয়ে থাকে। ইতিমধ্যেই শোভাযাত্রার রাস্তা সংস্কার করা, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা সহ একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের তরফে সবরকম সাহায্য করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’ 

    কবে, কেমন করে কার্তিক পুজো বাঁশবেড়িয়ার শুরু হয়েছিল তার খতিয়ান নিয়ে নানা মতান্তর আছে। একদা বংশরক্ষা বা সন্তানপ্রাপ্তির জন্য জমিদারদের হাতে পুজো শুরু হয়েছিল। সময়ের গতিকে সেই পুজো সর্বজনীন উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। বাতাসে শিশিরের বাড়বাড়ন্তের সঙ্গে গঙ্গাপাড়ের জনপদ এখন কোমর বাঁধছে। জামাই কার্তিক, সেনাপতি কার্তিক সহ নানা নামে ও আদলের কার্তিককে ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে বাঁশবেড়িয়া।
  • Link to this news (বর্তমান)