ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: ১০ দফা দাবির বেশ কিছু এখনও অপূর্ণ। সোমবার সন্ধের নবান্নের বৈঠক ঘিরেও অসন্তোষ রয়েছে। তার পরেও কেন অনশন প্রত্যাহার করলেন জুনিয়র ডাক্তাররা? এই অসাধ্য সাধনের নেপথ্য নায়ক কারা? কোন মন্ত্রে ‘বশ’ মানলেন আন্দোলনকারীরা? কেন-ই বা তুলে নিলেন স্বাস্থ্য ধর্মঘট? উঠছে প্রশ্ন।
আন্দোলনকারীদের জটলাতে কান পাতলেই অনশন প্রত্যাহার করানোর কারিগর হিসেবে শোনা যাচ্ছে চারটি নাম। কলকাতার তিন মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রিন্সিপাল ডা. পীতবরণ চক্রবর্তী, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. মানস বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ডা ইন্দ্রনীল বিশ্বাস, এসএসকেএম হাসপাতালের অঙ্কোলজি বিভাগের ভিজিটর কনসালট্যান্ট চিকিৎসক সৌরভ দত্ত এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক ডা. উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আবার সরকারের তৈরি করে দেওয়া কমিটির অন্যতম পৃষ্ঠপোষকও বটে। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী-আন্দোলনকারীদের ফোনালাপের পর থেকেই বোঝানোর কাজ শুরু করেন তাঁরা। কিঞ্জল-অনিকেত-দেবাশিস-সব বাকি আন্দোলনকারীদের বোঝাতে শুরু করেন, অনশন প্রত্যাহার করেও দাবি আদায় করা যায়। দাবিপূরণের অন্য পথও আছে। বলা হচ্ছিল, এবার যদি অনশন না তোলা হয় তাহলে এতদিনের আন্দোলন নিষ্ফলা হয়ে যাবে। পাশাপাশি বোঝানো হয়েছিল, এমন কোনও হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না যাতে রোগীদের কোনও সমস্যা হয়। কোনও বড় ক্ষতি হয়ে যায়।
শুধু সিনিয়র ডাক্তারদের বোঝানোই নয়, অনশন প্রত্যাহারের নেপথ্য়ে রয়েছে চাপ-ও। তাঁদের আন্দোলন নিয়ে বার বার নিশানা করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙে পড়লে দায় যে আন্দোলনকারীদেরই নিতে হবে, তা স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। জনমানসেও অন্যরকম প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। তাই সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গ ম্য়ারাথন বৈঠকের পর নিজেদের অবস্থান বদলাতে কার্যত বাধ্য হলেন রুমেলিকা-পরিচয়-অনির্বাণরা।