'দানা' নিয়ে আতঙ্ক সুন্দরবন উপকূলে, বাঁধে বাড়তি নজর
এই সময় | ২২ অক্টোবর ২০২৪
এই সময, বাসন্তী: দানা বাধছে ঘূর্ণিঝড় দানা। আতঙ্কে সুন্দরবনের মানুষজন। একের পর এক ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছে উপকূলে। ঝড়-জলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুন্দরবন। সেই সব অভিজ্ঞতার কথা মনে করে আতঙ্কে দিন কাটছে উপকূলের বাসিন্দাদের। ইতিমধ্যে বাসন্তী ব্লকের তিনটি জায়গায় নদীবাঁধে ধস নেমেছে। বিশেষ করে নফরগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরিঞ্চি বাড়ি এলাকায় বিদ্যা নদীর বাঁধে প্রায় তিনশো ফুট ধস নেমে তা নদীতে মিশেছে।২০০৯ সালে আয়লার পরেই সুন্দরবনে কংক্রিটের বাঁধ তৈরি করার কথা বলেছিল তৎকালীন বাম সরকার। কিন্তু পরে তা কিছু জায়গায় হলেও, বেশির ভাগ জায়গায় কংক্রিটের বাঁধ তৈরি হয়নি। এরপর বুলবুল, ইয়াস, উম্পুন, ফনির তাণ্ডবে তছনছ হয়েছে সুন্দরবন। এ বার দানা মোকাবিলার জন্য তৎপর প্রশাসন। ইতিমধ্যে বিদ্যার নদীবাঁধ মেরামতের জন্য মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে কাজ চলছে। একই সঙ্গে চলছে মাটি ভর্তি বস্তা দিয়ে নদীবাঁধ পোক্ত করার কাজ।
অন্য দিকে, বাসন্তী গ্রাম পঞ্চায়েতের পুরন্দরে হোগল নদীবাঁধের প্রায় ২৫০ ফুট অংশ নদীতে তলিয়ে গিয়েছে। সেখানেও বাঁধ মেরামতের কাজ করছে সেচ দপ্তর। পাশে রামচন্দ্রখালি পঞ্চায়েতের সোনাখালিতে আচমকা নদীবাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। প্রায় ২০০ ফুট বাঁধের অংশ নদীগর্ভে মিশেছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা বিমল হালদার বলেন, ‘প্রায় প্রতিবছর একটু একটু করে নদীবাঁধ ভেঙে গ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়ছে। কংক্রিটের নদীবাঁধ না নির্মাণ করলে আগামী দিনে গোটা গ্রামটাই তলিয়ে যাবে। আমরা সন্তানদের নিয়ে কোথায় যাব, জানি না।’
বাসন্তীর বিডিও সঞ্জীব সরকার বলেন, ‘যে সমস্ত ভাঙন কবলিত এলাকা রয়েছে এবং ধস নেমেছে সেই সব এলাকা চিহ্নিত করে নদীবাঁধ মেরামতের কাজ চলছে। আমাদের ব্লকের যে সমস্ত বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলি রয়েছে সেগুলিকে তৈরি রাখা হচ্ছে। খারাপ পরিস্থিতি বুঝলেই মানুষকে সেখানে এনে রাখা হবে।’
সুন্দরবনের ধীবররা তিন দিন যাতে কোনও ভাবে মাছ, কাঁকড়া ধরতে না যেতে পারেন, তাই বাসন্তী ব্লকের ঝড়খালি উপকূল থানার পুলিশ জেটিঘাট এলাকায় মাইকে প্রচার চালাচ্ছে। এই সময়ে প্রচুর পর্যটক সুন্দরবনে বেড়াতে আসেন। ঝড়খালির জেটিঘাট থেকে তাঁরা নদীপথে ভ্রমণ করেন। দুর্ঘটনা এড়াতে তাঁদের নদীতে যেতে বারণ করা হয়েছে।