আসানসোলের জন্য চলমান লাইব্রেরি তৈরির ইচ্ছে পুলস্ত্যর
এই সময় | ২২ অক্টোবর ২০২৪
বিশ্বদেব ভট্টাচার্য, আসানসোল
জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনে প্রথম থেকেই সামিল হয়েছিলেন তিনি। আট দিন অনশন করার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। কলকাতার অনশন মঞ্চ থেকে তাঁকে নিয়ে ছুটতে হয়েছিল হাসপাতালে। সেই জুনিয়র ডাক্তার পুলস্ত্য আচার্য খানিকটা সুস্থ হওয়ার পর রবিবার ফিরেছেন আসানসোলের বাড়িতে। যদিও তাঁর মন পড়ে অনশন মঞ্চে। সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সতীর্থদের বৈঠক দেখতে চোখ রেখেছিলেন টিভি চ্যানেলে। বৈঠক শেষে বললেন, ‘জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের সিদ্ধান্তই আমার সিদ্ধান্ত। শেষ দিন পর্যন্ত আন্দোলনের সঙ্গে থাকব।’নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের (এনআরএস) অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের পিজিটি প্রথম বর্ষের পড়ুয়া পুলস্ত্য এখন ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম মুখ। যদিও তাঁকে অন্য ভাবে দেখে এসেছেন আসানসোলের মানুষ। ভবিষ্যতে বই পড়ার অভ্যাস বাড়াতে আসানসোল শহরে একটি মোবাইল ভ্যান সমেত লাইব্রেরি বা চলমান গ্রন্থাগার তৈরি করতে চান তিনি।
কেন এমন ইচ্ছে?
জানা গেল, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এমবিবিএস পড়ার সময়ে করোনার প্রকোপ দেখা দেয়। আসানসোলে বাড়ি ফিরে রেড ভলান্টিয়ারদের সঙ্গে কাজে নেমে পড়েন। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সে সময়ে আসানসোল ছাড়া মেদিনীপুরেও করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়িয়ে অক্সিজেন, ওষুধ, খাদ্যসামগ্রী ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দিয়েছিলেন পুলস্ত্য ও তাঁর টিম। সেই দুঃসময় কাটিয়ে মানুষের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস ফেরাতে অভিনব উদ্যোগ নেন তিনি। নাম দেওয়া হয় ‘বই-সাম্য’।
আসানসোল ও বার্নপুরে রবীন্দ্র ভবন, সম্প্রীতি হল, ভারতী ভবন, পোলো ময়দানের মতো বিভিন্ন জায়গায় দলের কয়েকজনকে নিয়ে বসে পড়তেন পুলস্ত্য। তাঁদের দেখে অন্যরাও বই হাতে এগিয়ে আসতেন। এর পাশাপাশি আসানসোলের বিভিন্ন জায়গায় ফটোগ্রাফি ও পেন্টিং প্রদর্শনীরও আয়োজন করেন পুলস্ত্য ও তাঁর বন্ধুরা।
আপাতত পুলস্ত্য এখন কিছুদিন আসানসোলের বিসি কলেজ সংলগ্ন কলেজ পাড়ায় তাঁর বাড়িতেই থাকবেন। এখনই ছেলে কলকাতায় ফিরুক, তা চান না তাঁর বাবা-মাও। বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানার প্রাক্তন কর্মী বাবা পার্থপ্রতিম আচার্য ও মা কাজল আচার্যের কথায়, ‘ডাক্তারের পরামর্শ মতো ছেলেকে এখন তরল খাবার দিচ্ছি। আরও কয়েকদিন দেখে তার পর ওকে কলকাতায় পাঠাব।’ পুলস্ত্যর বক্তব্য, ‘চেষ্টা করব দু’-একদিন থাকতে। মা-বাবাও চাইছেন। তবে জরুরি প্রয়োজন হলে সঙ্গে সঙ্গে কলকাতায় ফিরে যাব।’