• আরজি করে মৃতদেহ গায়েবের বছর পার, তলব সিপিকেও
    এই সময় | ২২ অক্টোবর ২০২৪
  • এই সময়: আরজি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর ওই মেডিক্যাল কলেজের আরও বহু ‘অসুখে’র কথাই ক্রমান্বয়ে সামনে আসছে। দুর্নীতি, অনিয়মের অভিযোগের তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। নানা অনিয়মের অভিযোগের অন্যতম হলো মর্গ থেকে লাশ পাচার। ঘটনা হলো, কলকাতার কোনও মেডিক্যাল কলেজের মর্গ থেকে লাশ গায়েবের মারাত্মক অভিযোগ প্রথম সামনে এসেছিল ঠিক এক বছর আগে। এবং আরজি কর নয়, সে ঘটনা ছিল এসএসকেএমের। বছর পেরিয়েও যার কোনও কিনারা হয়নি।হাওড়া জেলা সংশোধনাগার থেকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে পাঠানো বিচারাধীন বন্দি বাবলু পোল্লে (৫৮) অসুস্থ হওয়ায় তাঁকে এসএসকেএমে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানে গত বছর ২০ ও ২১ অক্টোবরের মধ্যবর্তী রাতে তিনি মারা যান। পরের দিন (২২ তারিখ) পুলিশের মারফৎ খবর পাঠানো হয়েছিল হাওড়া জগাছায় বাবলুর বাড়িতে। অভিযোগ, ২৩ অক্টোবর বাড়ির লোক এসএসকেএমে এলেও বাবলুর দেহ তাঁরা পাননি। দেহ তাঁদের দেখাতেই পারেননি পুলিশ বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এক বছর পরেও সেই লাশের পরিণতি কী হয়েছে, তার কোনও হদিশ পরিবারকে দিতে পারেনি প্রশাসন।

    যে কোনও বন্দিমৃত্যুতে ইনকোয়েস্ট, পোস্ট মর্টেম বাধ্যতামূলক। বার বার সেই ইনকোয়েস্ট ও পিএম রিপোর্ট, ভিসেরা এবং হিস্টোপ্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট চেয়ে পায়নি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও। শেষমেশ কলকাতা পুলিশ কমিশনার (মর্গের দায়িত্ব পুলিশেরই) এবং প্রেসেডিন্সি সংশোধনাগারের সুপারকে আগামী ২৫ নভেম্বর দিল্লিতে তলব করেছে কমিশন। তবে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে পিএম রিপোর্ট এবং অন্য নথিপত্র কমিশনে জমা করা হলে ওই আধিকারিকদের ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে কমিশন জানিয়েছে।

    এই লাশ গায়েব নিয়ে গত বছর ২৭ অক্টোবর কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিলেন মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-এর সরাসরি সদস্য সমন্বয়ের আহ্বায়ক অপূর্ব রায়। তিনি জানান, এর আগে এ বছরই অন্তত তিন বার কমিশন নোটিস দিয়ে প্রশাসনের কাছে নথিপত্র চেয়েছিল। কিন্তু কোনও বারই পিএম রিপোর্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথি পেশ করতে পারেনি প্রশাসন।

    অপূর্বর কথায়, ‘বন্দিমৃত্যুর লাগাতার ঘটনায় হাইকোর্টও জেলের মধ্যে নিষ্ঠুরতা, চিকিৎসায় গাফিলতি, অবহেলা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলেছে। বাবলু পোল্লের ক্ষেত্রে মৃত্যুটাই বড় রহস্য হয়ে থেকে গিয়েছে। কিছু ঢাকতেই দেহ লোপাট করা হয়েছিল কি না--সে প্রশ্নও রয়েছে।’ যদিও পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, গত বছর পুজোর মধ্যে ওই ঘটনায় হাসপাতালে মৃত অন্য কারও পরিজন বাবলু পোল্লের দেহটি ভুল করে নিয়ে গিয়েছিল বলেই অনুমান।
  • Link to this news (এই সময়)