ঘটনাচক্রে, বুধবারই রাজ্যে আসার কথা ছিল শাহের। তবে সোমবার বিকেলেই জানা যায়, শাহের বঙ্গ সফর আপাতত বাতিল করা হয়েছে। কী কারণে সফর বাতিল হয়েছে, তা অবশ্য সরকারি ভাবে এখনও কিছু জানা যায়নি। তবে বিজেপি সূত্রে খবর, দুর্যোগ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই আপাতত রাজ্যে আসছেন না শাহ। তবে সফর ‘বাতিল’ বলতে চাইছে না রাজ্য বিজেপি। তাদের কথা, সফর কেবল মাত্র স্থগিত করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে শাহ রাজ্যে এলে কি নির্যাতিতার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি? বা তাঁদের দেখা করার জন্য কি দিল্লিতে ডাকা হবে? এমন বেশ কিছু প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে।
গত ৯ অগস্ট আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদের আঁচ গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে। নির্যাতিতার জন্য বিচারের দাবিতে সরব হয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা। সরব হয়েছে নাগরিক সমাজও। নির্যাতিতার জন্য বিচারের দাবি-সহ মোট ১০ দফা দাবি নিয়ে ৫ অক্টোবর থেকে ‘আমরণ অনশন’ শুরু করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সোমবার নবান্ন সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর অনশন প্রত্যাহার করেন তাঁরা।
ধর্মতলায় সোমবার রাতে জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চেও ছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। গত রাতে নির্যাতিতার বাবা জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘এঁদের জন্য এক দিন না এক দিন আমার মেয়ের জন্য ন্যায়বিচার ঠিক ছিনিয়ে আনব।’’ আন্দোলনকারীরাও জানিয়েছিলেন, সরকারের অনুরোধে নয়, নির্যাতিতার বাবা-মায়ের অনুরোধেই অনশন প্রত্যাহার করেছেন তাঁরা। এর পরেই মঙ্গলবার সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখার করার সময় চেয়ে ইমেল পাঠালেন নির্যাতিতার বাবা।
আরজি করের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জুনিয়র ডাক্তারদের যে আন্দোলন সংঘটিত হয়েছে, তাতে শুরু থেকেই সঙ্গে ছিল নির্যাতিতার পরিবার। কখনও তাঁরা মিছিলে হেঁটেছেন। কখনও ‘রাত দখল’-এ শামিল হয়েছেন। কখনও বাড়ির সামনেই ধর্নায় বসেছেন। মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের বিচার পাওয়ার আশায় রয়েছেন তাঁরা। কখনও রাজনীতির প্রত্যক্ষ মুখ, কখনও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন। অতীতে তাঁদের দু’টি ভিডিয়ো বার্তায় দু’রকম বয়ান ঘিরে রাজনৈতিক চর্চাও হয়েছে। আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্ধ ডেকেছিল বিজেপি। তবে সেই সময় ওই বন্ধের পক্ষে বা বিপক্ষে কোনও দিকেও থাকতে চাননি নির্যাতিতার পরিবার।