• জামিন পেয়ে নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ অভিযুক্ত পুরপ্রতিনিধির
    আনন্দবাজার | ২২ অক্টোবর ২০২৪
  • এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগে সিআইডি সম্প্রতি গ্রেফতার করেছিল বারাসত পুরসভার তৃণমূল পুরপ্রতিনিধিকে। জামিন পেয়ে বাইরে আসার পরে বারাসত পুরসভার সেই পুরপ্রতিনিধি তোপ দাগলেন দলের স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধেই। এমনকি, সিআইডি তাঁকে ফাঁসিয়েছে বলেও দাবি করলেন বারাসত পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি মিলন সর্দার।

    গত শনিবার জামিন পেয়েছেন মিলন। ত্রিপুরার বাসিন্দা এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিআইডি তাঁকে গ্রেফতার করে। জামিন পাওয়ার পরে এ দিন মিলন সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন, সিআইডি তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করেছে এবং শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে। গ্রেফতার হওয়ার পরে তাঁকে বহিষ্কার করায় তৃণমূলের বারাসত জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দেন মিলন। তাঁর দাবি, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। ষড়যন্ত্রীদের নাম তিনি দলকে জানাবেন। মিলন বলেন, ‘‘সিআইডি-র বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব।’’

    এ দিন নিজের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে দেবব্রত দে নামে ত্রিপুরার ওই ব্যবসায়ীর ছবি ও কিছু নথি দেখান মিলন। দেবব্রতকে অপহরণের অভিযোগেই তাঁকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি। মিলন বলেন, ‘‘রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন সব কিছু জেনেও ওই ব্যবসায়ীকে ধরেনি। ত্রিপুরার একটি মাদক মামলায় তিনি সেখানকার পলাতক আসামি। ওই ব্যবসায়ীকে অপহরণে আমি জড়িত ছিলাম, শারীরিক নির্যাতন করে আমাকে এমন বয়ান দিতে বাধ্য করা হয়েছে।’’ এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও সিআইডি কর্তৃপক্ষ অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

    তৃণমূলের টিকিটে জয়ী মিলন প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার ও প্রশাসন দুষ্কৃতীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে। সরকার জেনেশুনে কুখ্যাত অপরাধী ওই ব্যবসায়ীকে এখানে আশ্রয় দিয়েছে।’’ এ দিন একই সঙ্গে মিলন এ-ও দাবি করেছেন যে, ত্রিপুরার ওই ব্যবসায়ীকে তিনি চেনেনই না। বারাসতের দলীয় নেতৃত্বকে বিঁধে মিলন দাবি করেন, বিগত লোকসভা নির্বাচনে বারাসত পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৮টিতেই হেরেছে তৃণমূল। তিনি বলেন, ‘‘আমার ওয়ার্ডে তৃণমূল জিতেছে, যা অনেকের সহ্য হয়নি। অনেকেই হেরেছেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়া ওয়ার্ডে ’২৪ সালে লিড দিয়েছি বলেই আমার বিরুদ্ধে এত বড় ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।’’

    জামিন পেয়ে পুরসভায় যাবেন জানিয়ে মিলন জানান, তিনি পুর পরিষেবার কাজ শুরু করতে চান। এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উনি দল থেকে বহিষ্কৃত। কিন্তু নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। তাই এ ক্ষেত্রে মহকুমাশাসকের সঙ্গে কথা বলে আইনগত দিকটি খতিয়ে দেখতে হবে।’’

    মিলনের মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে বারাসত জেলা তৃণমূল সভাপতি ও সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার বলেন, ‘‘বিষয়টি বিচারাধীন। আদালত ও সিআইডি দেখছে। কোনও মন্তব্য করব না।’’

  • Link to this news (আনন্দবাজার)