বাবা–মেয়েকে কলকাতার রাজপথে পিষে দিল ট্যাক্সি, মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু ২
হিন্দুস্তান টাইমস | ২২ অক্টোবর ২০২৪
দুর্গাপুজোর ছুটি কেটে গিয়েছে। এবার স্কুল খুলে গিয়েছে। আর স্কুলে গিয়ে দুর্গাপুজো কেমন কাটল এবং কোন কোন ঠাকুর দেখা হয়েছে সেসব নিয়ে গল্প করার ভাবনা ছিল পাঁচ বছর বয়সের মিশিকা সাউয়ের। তাই আজ, মঙ্গলবার বাবার হাত ধরে আনন্দে স্কুলে যাচ্ছিল মিশিকা সাউ। কিন্তু পথ দুর্ঘটনায় জীবনই চলে গেল। আর ভাগ করে নেওয়া হল না দুর্গাপুজোর আনন্দ। স্কুলে যাওয়ার পথেই ট্যাক্সির ধাক্কায় মৃত্যু হল বাবা অমিত সাউ এবং মেয়ে মিশিকা সাউয়ের। আজ, মঙ্গলবার সকালে পথ দুর্ঘটনা ঘটে পাইকপাড়া এলাকার ডানলপগামী রাস্তার উপর। ট্যাক্সির একধাক্কায় মৃত্যু হয় দু’জনের। এই ঘটনায় প্রবল উত্তেজনা দেখা দেয় বিটি রোড এলাকায়। ক্ষোভে ফেটে পড়েন উত্তেজিত জনতা। গ্রেফতার করা হয় ঘাতক ট্যাক্সি চালককে।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, দক্ষিণ কলকাতার গাঙ্গুলিবাগানের বাসিন্দা অমিত সাউ। আজ অন্যান্যদিনের মতোই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে স্কুলে দিতে যাচ্ছিলেন অমিতবাবু। চিৎপুর থানা এলাকায় হঠাৎ ঘটে যায় পথ দুর্ঘটনা। টালা ব্রিজের ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে পিছন থেকে আসা একটি ট্যাক্সি পিষে দেয় অমিতবাবু ও তাঁর মেয়ে মিশিকাকে। আর ঘটনাস্থলে তাঁদের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পর দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। তদন্তে নামে চিৎপুর থানার পুলিশ এবং ঘাতক ট্যাক্সিকে আটক করে তার চালককে গ্রেফতার করা হয়।
অন্যদিকে ওই ট্যাক্সির গতি অত্যন্ত বেশি ছিল বলে জানাচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। পিছন দিক থেকে আচমকা ধাক্কা মারার ফলেই এমন মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। একই পরিবারের দু’জন সদস্য একসঙ্গে মারা গেল। এই অকালমৃত্যুতে সাউ পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কালীপুজো এবং দীপাবলির প্রাক্কালে এমন মর্মান্তিক মৃত্যু খাস কলকাতাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। টালা এলাকার বাসিন্দারা এই ঘটনার পর রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান। শুধুমাত্র তীব্র গতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরেই সজোরে ধাক্কা মারে ট্যাক্সি। তার জেরেই বাবা–মেয়ের মৃত্যু হল রাজপথে।
এছাড়া পুলিস সূত্রে খবর, পথ দুর্ঘটনার পর কুমোরটুলি পার্ক সংলগ্ন একটি পরিত্যক্ত গোডাউনের সামনে ট্যাক্সিকে লুকিয়ে রেখেছিল অভিযুক্ত চালক। তদন্তে করতে নেমে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। তখনই পুলিশ ওই ট্যাক্সিকে ধরে ফেলা হয়। এই পথ দুর্ঘটনায় খুনের মামলা দায়ের করেছে চিৎপুর থানা। বাবা–মেয়ের মৃত্যুতে পরিবারে নেমে এসেছে কান্নার রোল। ওই ট্যাক্সি চালক নেশা করে গাড়ি চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। যোগাযোগ করা হয়েছে পরিবারের সঙ্গে।