শিলিগুড়িগামী ২৬ লক্ষ টাকার ভোজ্য তেল বোঝাই ট্রাক উধাও, শুরু তদন্ত
বর্তমান | ২৩ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, হলদিয়া: হলদিয়া থেকে শিলিগুড়ি যাওয়ার পথে ফের মাঝরাস্তায় উধাও হয়ে গেল ২৬ লক্ষ টাকার ভোজ্য তেল বোঝাই ট্রাক। হলদিয়া থেকে যাত্রা শুরুর দু'সপ্তাহ পরও শিলিগুড়ির নির্দিষ্ট গন্তব্যে না পৌঁছয়নি ট্রাকটি। ফলে আজ, মঙ্গলবার ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে ট্রান্সপোর্ট সংস্থা। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়ার একটি কারখানা থেকে গত ৭ অক্টোবর ওই ট্রাকটি রওনা দিয়েছিল। পুজোর ঠিক আগে একইভাবে ওই ভোজ্য তেলের কারখানা থেকে শিলিগুড়ি যাচ্ছিল একটিস ট্রাক। সেবারও ২৪ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকার ভোজ্য তেল বোঝাই গাড়িটি উধাও হয়ে গিয়েছিল। ফের মাস দেড়েকের মাথায় ওই একই কারখানা থেকে আরও একটি গাড়ি শিলিগুড়ি যাওয়ার পথে বেপাত্তা হল। পর পর এভাবে ট্রাক উধাও হওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন শিল্প সংস্থা ও ট্রান্সপোর্ট সংস্থাগুলিও ব্যবসায়িক লেনদেন করতে গিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।
পুলিস জানিয়েছে, হুগলির কোন্নগরের একটি ট্রান্সপোর্ট সংস্থা শিলিগুড়িতে পণ্য পাঠানোর দায়িত্ব পেয়েছিল। তারা এক দালালের মাধ্যমে ১২ চাকার ট্রাক ভাড়া করে। ওই গাড়িতে ২৬ লক্ষ ৩২ হাজার টাকার সোয়াবিন তেলের পাউচের কার্টুন বোঝাই করা হয়। শিলিগুড়িতে পাঠানোর কথা ছিল ওই ভোজ্যতেল। ট্রান্সপোর্ট সংস্থার ম্যানেজার সুমন পট্টনায়ক বলেন, গন্তব্যে না পৌঁছনোর কারণে গাড়ির ড্রাইভারকে ফোন করি আমরা। তাঁর মোবাইল বন্ধ দেখে সন্দেহ হয়। গাড়ির দালালও সুইচ অফ করে রেখেছে। মনে হচ্ছে, ওদের ভিতর কোনও যোগসাজস রয়েছে। তার ফলেই গাড়ির হদিশ মিলছে না। ভবানীপুর থানাতেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, এই ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে।
গত আগস্ট মাসের মাঝামাঝি এভাবে পর পর দু'টি ভোজ্য তেলের ট্রাক প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকার তেল নিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছিল। গত জুন মাসেই পর পর তিন সপ্তাহে ৩টি কারখানার প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকার ভোজ্য তেলের ট্রাক গায়েব হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। গত আগস্টে তেল-সহ যে ট্রাক উধাও হয়েছিল তা পরে নদীয়া থেকে ধরা পড়েছিল। তমলুকের নিমতৌড়ির একটি ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির দায়িত্ব ছিল কারখানা থেকে তেল শিলিগুড়ি পৌঁছে দেওয়ার। সেই তেল মাঝপথেই উধাও হয়ে গিয়েছিল। পুজোর ঠিক আগেই হলদিয়া থেকে ২৫ টন ভোজ্য তেল কিনতে গিয়ে কলকাতার এক মহিলা এক্সপোর্টার প্রতারিত হয়েছেন। ঘটনায় ৪ জন ধরা পড়লেও ওই ব্যবসায়ীর ১০ লক্ষ টাকা এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিস। তদন্তকারীরা বলেন, বিভিন্ন ট্রান্সপোর্ট সংস্থা যখন দালালদের থেকে ট্রাক ভাড়া নেয় তখন তা ঠিকমতো যাচাই করা হয় না। আর তার ফলেই বিপদ ঘটছে। প্রতি মাসেই প্রায় ট্রাক উধাও হচ্ছে। চোরাই তেলের চক্র রয়েছে বিভিন্ন জেলাতেই।