• জেলায় জোরকদমে চলছে আবাস যোজনার সমীক্ষা
    বর্তমান | ২৩ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: লোকসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, আবাসের টাকা রাজ্য সরকার দেবে। সেই লক্ষ্যে দুর্গাপুজো মিটতেই জোরকদমে সমীক্ষার কাজ শুরু করল মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন। শেষবার আবাস যোজনার সার্ভে অনুযায়ী জেলায় ২ লক্ষ ৬৪ হাজার পরিবার বাড়ি পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিল। তারমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের পোর্টালে ৪৪ হাজার আবেদন অনুমোদন হয়ে যাওয়ার পরেও টাকা আসেনি। এবার এইসব আবেদনের পুনরায় সমীক্ষা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে নতুন আবেদনও গৃহীত হবে। 

    মঙ্গলবার থেকে জেলার ২৫০টি গ্রাম পঞ্চায়েতে জোরকদমে এই সমীক্ষার কাজ শুরু হল। প্রকৃত গৃহহীনরা যাতে বাড়ি পায় সেটাই লক্ষ্য প্রশাসনের। জেলার ২৬টি ব্লকে সকাল থেকে বহু টিম ঘুরছে। সোমবার কয়েকটি জায়গায় সার্ভারের কারণে সমীক্ষার কাজে সমস্যা হলেও মঙ্গলবার কাজ চলল পুরোদমে। পঞ্চায়েত কর্মীরা উপভোক্তাদের বর্তমান বাসস্থানের ছবি তুলে সেগুলিকে সংশ্লিষ্ট অ্যাপ্লিকেশনে আপলোড করলেন সঙ্গে সঙ্গে। একইসঙ্গে সেই ছবি সেই জায়গায় দাড়িয়েই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রাজ্যের পোর্টালে আপলোড করলেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) শামসুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার থেকে প্রতিটি জায়গায় সমীক্ষার কাজ খুব সুন্দরভাবে হচ্ছে। প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতেই সমীক্ষা করার জন্য টিম বেরিয়েছে। সাত থেকে দশ দিন সময় দেওয়া  হয়েছে, তার মধ্যে সমীক্ষার রিপোর্ট তৈরি করে তারা পাঠাবে।

    এদিন কান্দি মহকুমার পাঁচটি ব্লকেই আবাস যোজনার সার্ভে শুরু হয়েছে। ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত কান্দি মহকুমায় এই সার্ভে চলবে বলে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে ভরতপুর-১ ব্লকের হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামের তিনজন ব্যক্তি আবাস যোজনার আবেদন জমা করতে না পারায় ক্ষুব্ধ। মঙ্গলবার তাঁরা স্থানীয় বিডিও অফিসে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তবে এবার সার্ভের কাজ সম্পূর্ণভাবে প্রশাসনের লোকজন করছে বলে খুশি জনপ্রতিনিধিরা। 

    কান্দি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পার্থপ্রতিম সরকার বলেন, ফের আবাস যোজনার সার্ভে শুরু হয়েছে। এটি সম্পূর্ণভাবে সিভিল প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে। সেখানে বিডিওর লোকজন ও পুলিস বাড়ি বাড়ি গিয়ে সার্ভে করছেন। তাতে সার্ভের ভুলত্রুটি জনপ্রতিনিধিদের ঘাড়ে বর্তাবে না।

    ডোমকলের বাসিন্দা জয়দেব সাহা বলেন, ছেলে তার বউ, বাচ্চা নিয়ে কেরলে থাকে। সারাদিন শাঁখার কারখানায় কাজ করে যা উপার্জন করি তা অসুস্থ স্ত্রীর ওষুধ কিনতেই ফুরিয়ে যায়। ফুটো টিনের চালে বৃষ্টি হলেই ঘরে জল ঢুকে যায়। শুনছি আবার ঘরের সার্ভে শুরু হয়েছে। এবারে যদি সরকার থেকে একটা বাড়ি করে দেয় তাহলে বাকি জীবনটুকু ভালোভাবে কাঁটাতে পারব।  ডোমকলের বিডিও শঙ্খদীপ দাস বলেন, সোমবার সকালে রাজ্যের সমস্ত এলাকাতেই সার্ভারের গোলযোগ হয়েছিল। 

    তবে মঙ্গলবার সকাল থেকেই মসৃণভাবে সবক’টি পঞ্চায়েত এলাকায় আবাস যোজনার সমীক্ষার কাজ চলছে। এদিন সকালেই সামশেরগঞ্জের মধ্য চাচণ্ডে সার্ভে করতে যান কর্মীরা। সার্ভে শুরু হওয়ায় উচ্ছসিত এলাকাবাসী। শান্তারা বিবির বাড়িতেও যান প্রশাসনের লোকজন। শান্তারা বিবির বাড়ির অবস্থা ঘুরে দেখেন। তাঁর সঙ্গে কথাও বলেন। শান্তারা বিবি বলেন, আমি ভাঙাচোরা ঘরে বাস করি। বাড়ি করতে পারিনি। সরকারি লোক এসেছিল, ওরা বলেছে বাড়ির টাকা ঢুকবে। সরকারি টাকা পেলে খুবই উপকার হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)