• ট্রাকে জিরের বস্তার পিছনে গাঁজা পাচারের প্রচেষ্টা ব্যর্থ
    বর্তমান | ২৩ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: উত্তরবঙ্গ থেকে নদীয়ায় গাঁজা পাচারের আগেই বহরমপুরে আটক হল একটি ট্রাক। জিরের বস্তার আড়ালে চলছিল গাঁজা পাচারের চেষ্টা। বহরমপুরের ফতেপুরের কাছে ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে মঙ্গলবার সকালে ট্রাকটিকে আটক করে তল্লাশি চালানো হয়। জিরের কয়েকটি বস্তার পিছনে লুকিয়ে রাখা ছিল গাঁজা। এই ঘটনায় চালককে গ্রেপ্তার করে বহরমপুর থানার পুলিস। ধৃতের নাম, আব্দুল ইসলাম। তার বাড়ি মালদার মানিকচক এলাকায়। ধৃতকে মঙ্গলবার বহরমপুরের মাদক সংক্রান্ত বিশেষ আদালতে তুলে পুলিসি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। উদ্ধার হওয়া মাদকের দাম প্রায় ১০ লক্ষ টাকা বলে জানিয়েছেন পুলিস আধিকারিকরা। উত্তরবঙ্গ থেকে মুর্শিদাবাদ রুট হয়ে বারবার দক্ষিণবঙ্গে মাদক পাচারের ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে পুলিসের। 

    বহরমপুর থানার আইসি উদয়শঙ্কর ঘোষ বলেন, অভিযুক্ত লরি চালককে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে। কোথা থেকে এই গাঁজা কিনে কার কাছে তা পাঠানো হচ্ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই কারবারের সঙ্গে কারা কারা জড়িত আছে, তাদের ব্যাপারেও আমরা তদন্ত শুরু করেছি। 

    উৎসবের মরশুম শেষ হতেই মাদক কারবারিরা উঠে পড়ে লেগেছে। প্রথমে চারচাকা গাড়িতে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড লাগিয়ে মাদক পাচারের চেষ্টা করা হয়। পুলিসি তৎপরতায় তা ব্যর্থ হয়। ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা না কাটতেই  মালবাহী লরিতে জিরের বস্তার আড়ালে মাদক পাচারের ছক কষে দুষ্কৃতীরা। কিন্তু সেই ছকও বানচাল করে পুলিস। লরির চালককে গ্রেপ্তার করে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মাদকবাহী গাড়ির চালকরা গ্রেপ্তার হলেও এই মাদক কারবারের মূল কারবারিরা আড়ালেই থেকে যায়। তাই মাদক পাচারে কিছুতেই লাগাম টানতে পারছে না পুলিস। 

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে ঢুকছে গাঁজার বড় বড় কনসাইনমেন্ট। তারপর সেখান থেকে অল্প পরিমাণে গাঁজা ট্রাক কিংবা অন্য মালবাহী গাড়িতে দক্ষিণবঙ্গে পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। নতুন নতুন ব্যক্তিদের ক্যারিয়ার হিসেবে নিযুক্ত করছে পাচারকারীরা। তার পরেও গাঁজা পাচার রুখে দিচ্ছে পুলিস। 

    উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে করে গাঁজা পাচার করার সময় রবিবার সকালে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিসের হাতে গ্রেপ্তার হয় ওই গাড়ির চালক। ধৃতের গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ১২২ কেজি গাঁজা। কোচবিহার থেকে সেই গাঁজা নিজের গাড়িতে করে বিক্রি করছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক চুক্তিভিত্তিক কর্মী। মোটা টাকা পাওয়ার লোভে সে এই কাজ শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয় বোর্ড লাগানো গাড়ি দেখে পুলিসের সন্দেহ হওয়ার কথা নয়, তাই সেই গাড়িতেই গাঁজা পাচার নিরাপদ বলে মনে করেছিল দুষ্কৃতীরা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। একদিন যেতে না যেতেই মঙ্গলবার ফের অন্য কায়দায় দক্ষিণবঙ্গে গাঁজা পাচারের চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। 

    এদিন ট্রাকে জিরের বস্তার মধ্যে একই কায়দায় আলাদা কয়েকটি বস্তায় লুকিয়ে ফেলা হয়েছিল ১০৮ কেজি গাজার প্যাকেট। জিরের ঝাঁঝালো গন্ধে গাঁজার গন্ধ বাইরে আসার উপায় নেই। তাই ট্রাকের ডালা খুলে রাস্তায় পুলিসকর্মীরা চেক করলেও তা খালি চোখে দেখে বোঝার উপায় থাকবে না। তাই দুষ্কৃতীরা ট্রাকের উপরের দিকে জিরের বস্তা রেখে ভিতরে গাঁজার বস্তা সাজিয়ে দেয়। কিন্তু এক্ষেত্রে শেষ রক্ষা হল না। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বহরমপুর থানার পুলিস জাতীয় সড়কের উপর নির্দিষ্ট ট্রাকটিকে দাঁড় করিয়ে গাঁজার বস্তা উদ্ধার করে। 
  • Link to this news (বর্তমান)