বাংলাদেশে ফেরার সময় পুলিসের জালে ৪১ অনুপ্রবেশকারী, চাঞ্চল্য
বর্তমান | ২৩ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, লালবাগ: বাংলাদেশে ফেরার সময় একসঙ্গে ৪১জন অনুপ্রবেশকারীকে পাকড়াও করল রানিতলা থানার পুলিস। সোমবার রাতে রানিতলা থানার নশিপুর পঞ্চায়েতের পার সাহেননগর এলাকার একটি মাঠে তারা জড়ো হয়েছিল। ওপার বাংলায় যাওয়ার জন্য তারা ওত পেতেছিল। তার আগেই পুলিস তাদের গ্রেপ্তার করে। ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে প্রশাসনের। মুর্শিদাবাদ জেলার পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে এদেশে অনুপ্রবেশ ঘটছে। সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের পর রাজ্যের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তারা ছড়িয়ে পড়ছে। ছোটখাট কাজ জোগাড় করে তারা দিব্যি এদেশে থাকছে। এই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করাই প্রশাসনের কাছে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে একসঙ্গে এত সংখ্যক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী গ্রেপ্তার হওয়ায় সীমান্তের প্রহরী বিএসএফের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠছে সীমান্তে বিএসএফের কড়া নজরদারি এড়িয়ে ওপারের বাসিন্দারা কীভাবে অবৈধভাবে এদেশে ঢুকছে?
ভগবানগোলার এসডিপিও উত্তম গড়াই বলেন, অনুপ্রবেশকারীরা বিভিন্ন সময়ে লালগোলা, ভগবানগোলা, রানিতলা প্রভৃতি সীমান্ত দিয়ে এদেশে অনুপ্রবেশ করেছিল। এক বছরের বেশি সময় ধরে দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করছিল। সেখানে বৃষ্টিপাত হওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরে কাজ না থাকায় বাড়ি ফেরার জন্য সোমবার শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে চেপে ভগবানগোলা স্টেশনে নামে। সেখান থেকে টোটোয় চেপে পার সাহেবনগরে আসে। রাতের অন্ধকারে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। সোর্স মারফত খবর পেয়ে ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বেশিরভাগ অনুপ্রবেশকারীর বাড়ি রাজশাহী জেলার গোদাগারি থানা এলাকায়। ধৃতদের মঙ্গলবার লালবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক চারজনকে পাঁচদিনের পুলিস হেফাজত এবং বাকিদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদ জেলায় ১২৫ কিলোমিটার ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে ৪২ কিলোমিটার স্থলভাগে এবং বাকি ৮৩ কিলোমিটার নদীসীমা রয়েছে। স্থলভাগের সীমান্তের বেশ কয়েক কিলোমিটারে কাঁটাতারের বেড়া নেই অর্থাৎ উন্মুক্ত। বিএসএফের নজরদারি থাকা সত্ত্বেও সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ ঘটছে। মাঝেমধ্যে বিএসএফ ও পুলিসের হাতে পাকড়াও হলেও অনুপ্রবেশ একেবারে বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। আর এই অনুপ্রবেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে দুই দেশের সীমান্তের দালালদের। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওপার এবং এপারের দালালদের হাত ধরে বেশ কয়েকবারে ধৃতরা এদেশে এসেছিল। দালালের হাত ধরেই ওপারে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। এক অনুপ্রবেশকারী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য সপ্তাহ খানেক আগে রানিতলা থানা এলাকার দুই দালালের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাদের কথামতো ওইদিন ভগবানগোলা হয়ে সীমান্তবর্তী পার সাহেবনগরের একটি মাঠে জড়ো হয়েছিল। সুযোগমতো ওপারে ফিরে যেত। তার আগেই পুলিস তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে।
উল্লেখ, গত শুক্রবার ও রবিবার লালগোলা এবং রানিতলা থেকে পাঁচজন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরপর এই ঘটনায় বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।